নয়াদিল্লি: এক্সিট পোলের ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে মিল রেখে দিল্লি বিধানসভা ভোটের গণনায় অনেক এগিয়ে আছে আমআদমি পার্টি (আপ)। বিজেপির গতবারের তুলনায় আসন বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। গতবার তারা জিতেছিল মাত্র তিনটি আসনে। গতবার আপ ৬৭টি আসন ও ৫৪ শতাংশ ভোট পায়। বিজেপি পেয়েছিল ৩২ শতাংশ ভোট। যদিও ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে তাদের ভোট শতাংশ বেড়ে ৫৬ শতাংশ হয়। কংগ্রেস ২০১৫য় পেয়েছিল মোটে ১০ শতাংশ ভোট।


এবারের ভোটে দিল্লিতে প্রায় দুমাস ধরে চলা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী আন্দোলন, প্রতিবাদ কত বড় ইস্যু, তা নিয়ে জল্পনা, চর্চার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে, নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত তথ্য অনুসারে ওখলায় এগিয়ে আছে বিজেপি। যে শাহিনবাগে মহিলারা সিএএ ও প্রস্তাবিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর (এনআরসি) বিরুদ্ধে রাস্তা আটকে অবস্থানে বসে আছেন, নরেন্দ্র মোদি সরকারের এই কর্মসূচি বাতিলের দাবি করছেন, সেটি এই ওখলার অন্তর্গত। শেষ খবর, সেখানে আপের বর্তমান বিধায়ক আমানাতুল্লাহ খান বেশ কিছুক্ষণ পিছিয়ে থেকেও ৭০ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে আছেন। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির প্রার্থী ব্রহম সিংহ। বিজেপি এবার প্রচারে শাহিনবাগকে দেশবিরোধী প্রচারের ঘাঁটি বলে তুলে ধরেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শাহিনবাগের প্রতিবাদের পিছনে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি, জাতীয় সংহতি বিপন্ন করার ‘চক্রান্ত’ দেখেছিলেন। বলেছিলেন, সিলামপুর, শাহিনবাগ যেখানেই হোক,গত বেশ কিছুদিন ধরে সিএএ-বিরোধী যে বিক্ষোভ চলছে, তা কি কাকতালীয়? না, একেবারেই তা নয়। একটা পরীক্ষা চলছে। অমিত শাহ বলেছিলেন, এমন জোরে ইভিএমে বোতাম টিপুন, যাতে শাহিনবাগে কারেন্ট লাগে!
আরেক বিজেপি প্রার্থী কপিল মিশ্র, যিনি শাহিনবাগের অবস্থানকে কটাক্ষ করেছিলেন, তিনিই পিছিয়ে পড়েছেন।

ওখলায় ৫৮.৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। ওখলার মধ্যে পড়ছে জাকির নগর, বাটলা হাউস, জাসোলা, কালিন্দি কলোনি, আবুল ফজল এনক্লেভ, ওখলা বিহার, সরিতা বিহার, মদনপুর খাদার প্রভৃতি এলাকাও। গণনার ইঙ্গিত অনুসারে আমানাতুল্লাহ জয়ের পথে এগিয়ে চলেছেন।
যে ১৭টি কেন্দ্রে সিএএ-বিরোধী প্রতিবাদ,আন্দোলন হয়েছে, সেগুলির ১১টিতেই এগিয়ে আপ প্রার্থীরা।
আরেক মুসলিম অধ্যুষিত কেন্দ্র সিলামপুরে আপের আবদুল রহমান এগিয়ে। ১৭ডিসেম্বর সিএএ-বিরোধী আন্দোলন, বিক্ষোভের সময় সেখানে ব্যাপক অশান্তি, হিংসা হয়েছিল। সিলমপুরে ৭১.২২ শতাংশ ভোট পড়ে। ২০০৩, ২০০৮ ও ২০১৩-য় সেখানে জিতেছিল কংগ্রেস। তবে ২০১৫য় সেখানে কংগ্রেসের বিজয়রথ থমকে দেন আপ নেতা মহম্মদ ইশরাক। তিনি বিজেপির সঞ্জয় জৈনকে ২৭৮৮৭ ভোটে হারান।
মতিয়া মহলেও এগিয়ে আছেন আপ প্রার্থী শোয়েইব ইকবাল। গত বিধানসভা নির্বাচনে ২৬০৯৬ ভোটে সেখানে জেতেন আপ প্রার্থী আসিম আহমেদ খান।
মুস্তাফাবাদে এগিয়ে বিজেপির বর্তমান বিধায়ক জগদীশ প্রধান। ২০১৫য় বিজেপি সাকুল্যে যে তিনটি আসনে জেতে, সেগুলির একটি মুস্তাফাবাদ।