দুবাই: দক্ষিণ আফ্রিকার পচেস্টর্মে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচের পর অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িত থাকার জন্য ভারতের দুই খেলোয়াড় আকাশ সিংহ ও রবি বিষ্ণোই এবং বাংলাদেশের তিন ক্রিকেটারকে অভিযুক্ত করল আইসিসি।
আকাশ ও বিষ্ণোইয়ের সঙ্গে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটার মহম্মদ তৌহিদ হৃদয়, শামিম হোসেন ও রাকিবুল হাসানকে আইসিসি-র আচরণ বিধি ভঙ্গে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ফাইনালে ভারতকে তিন উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ।
আইসিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাঁচ ক্রিকেটার প্লেয়ার ও সাপোর্ট স্টাফদের জন্য আইসিসি আচরণবিধির লেভেল ৩ ভঙ্গ করেছেন। তাঁদের আচরণবিধির ২.২১ ধারা ভঙ্গের জন্য দায়ী করা হয়েছে। বিষ্ণোইকে ২.৫ ধারা ভঙ্গের জন্যও দায়ী করা হয়েছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ওই পাঁচ ক্রিকেটারই আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ম্যাচ রেফারি গ্রেম ল্যাব্রোয়ের প্রস্তাবিত সাজা গ্রহণ করেছেন।
উল্লেখ্য, ফাইনালে জয়ের পর বাংলাদেশের কয়েকজন প্লেয়ার উচ্ছ্বাস পালন করতে গিয়ে ভারতীয় খেলোয়াড়দের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। ওই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক আকবর আলি। এই ঘটনার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। অন্যদিকে, ভারতের অধিনায়ক প্রিয়ম গর্গ বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা একেবারেই অনভিপ্রেত।
ফাইনাল ম্যাচের শুরু থেকেই উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে। বাংলাদেশের প্লেয়াররা ছিলেন আগ্রাসী মেজাজে। পেসার শরিফুল ইসলাম প্রায় প্রতি বলের শেষেই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের স্লেজিং করেন। বাংলাদেশ যখন জয়ের দিকে এগোচ্ছিল, তখনও শরিফুলের আগ্রাসী মেজাজ ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।
ম্যাচ শেষ হওয়ার পর বাংলাদেশের প্লেয়াররা মাঠে ছুটে আসেন এবং তাঁদের শরীরী ভাষায় তখনও আক্রমণাত্মক মনোভাব স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। এরফলে মাঠে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
আইসিসি জানিয়েছে, ভারতের আকাশ ২.২১ ধারা ভঙ্গের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর জন্য আট সাসপেনশন পয়েন্ট বরাদ্দ হয়েছে, যা ছয় ডিমেরিট পয়েন্টের সমান। তাঁর রেকর্ডে আগামী দুই বছর তা থাকবে।
বিষ্ণোই ২.৫ ধারা ভঙ্গের ১ লেভেলের অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁকে পাঁচ সাসপেনশন পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে, যা পাঁচ ডিমেরিট পয়েন্টের সমান।
আইসিসি-র বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিষ্ণোই ম্যাচ চলাকালে অন্য একটি ঘটনার জন্য ২.৫ ধারার ভঙ্গের ১ লেভেলের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। এজন্য তাঁকে আরও দুই ডিমেরিট পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে। অর্থাত্ আগামী দুই বছর তাঁর রেকর্ডে থাকছে সাত ডিমেরিট পয়েন্ট।
বাংলাদেশের হৃদয় ২.২১ ধারা ভঙ্গের অভিযোগ স্বীকার করেছেন এবং তাঁকে ১০ সাসপেনশন পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে, যা ছয় ডিমেরিট পয়েন্টের সমান। এই পয়েন্ট তাঁর রেকর্ডে আগামী দুই বছর থাকবে।
শামিম ২.২১ ধারা ভঙ্গের অভিযোগ স্বীকার করেছেন এবং তাঁর জন্য আট সাসপেনশন পয়েন্ট বরাদ্দ হয়েছে, যা ছয় ডিমেরিট পয়েন্টের সমান। এই পয়েন্ট তাঁর রেকর্ডে আগামী দুই বছর থাকবে।


রকিবুল ২.২১ ধারা ভঙ্গের অভিযোগ স্বীকার করেছেন এবং তাঁকে চার সাসপেনশন পয়েন্ট দেওয়া হয়েছে, যা পাঁচ ডিমেরিট পয়েন্টের সমান। এই পয়েন্ট তাঁর রেকর্ডে আগামী দুই বছর থাকবে।
সমস্ত অভিযোগগুলি দায়ের করেছিলেন দুই আম্পায়ার স্যাম নোগাজস্কি, অ্যাদ্রিয়েন হোল্ডস্টোক, তৃতীয় আম্পায়র রবীন্দ্র উইমালাসিরি এবং চতুর্থ আম্পায়ায় প্যাট্রিক বঙ্গনি জেলে।
এই সাসপেনশন পয়েন্টগুলি ওই প্লেয়ারদের অনূ্র্ধ্ব ১৯ বা সিনিয়র পর্যায়, আগামী আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলিতে প্রযোজ্য হবে। একটি সাসপেনশন পয়েন্ট মানে সংশ্লিষ্ট প্লেয়ার একটি একদিনের ম্যাচ বা টি ২০, অনূর্ধ্ব ১৯ বা এ দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলতে পারবেন না।