নয়াদিল্লি: ধর্ষণের মামলায় নাম জড়ানোর পর থেকেই বেপাত্তা। এবার জানা গেল, সুদূর অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে গিয়েছেন পঞ্জাবে আম আদমি পার্টির বিধায়ক হরমীত সিংহ পাঠানমাজরা। সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, জামিন পেলে তবেই দেশে ফিরবেন তিনি। (ধর্ষণ মামলায় গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন হরমীত। (Harmit Singh Pathanmajra)

Continues below advertisement

ধর্ষণ মামলায় গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন হরমীত। সম্প্রতি ভিডিও কনফারেন্সে একটি সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হন তিনি। আর তাতেই জানা যায়, অস্ট্রেলিয়া পালিয়ে গিয়েছেন তিনি। এই ঘটনা পঞ্জাব পুলিশের জন্যও অত্যন্ত লজ্জাজনক। কারণ সনৌরের বিধায়ক হরমীত কার্যত তাদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেশ ছেড়েছেন। (AAP News)

হরমীতের খোঁজে তার বাড়ি থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। আদ আমদি পার্টির বিধায়কের বিরুদ্ধে জারি করা হয় লুক আউট নোটিসও। কিন্তু কোথাও তাঁর খোঁজ মেলেনি। বরং শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ায় একটি পঞ্জাবি ওয়েব চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিতে সটান আবির্ভূত হন তিনি। জানান, জামিন পেলে তবেই দেশে ফিরবেন। 

Continues below advertisement

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হরমীত। গোটা বিষয়টিকেই তিনি ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেছে। তাঁর দাবি, পঞ্জাবের সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বলেন বলে তাঁর কণ্ঠরোধের চেষ্টা চলছে। তাঁর বক্তব্য, “পঞ্জাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মন্ত্রী, বিধায়কদের পরামর্শ নেওয়া হয় না। বাক্ স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে সেখানে। দিল্লিতে হারার পর পঞ্জাব দখল করছেন নেতারা। একই নীতি খাটানো হচ্ছে পঞ্জাবে।”

বিচারব্যবস্থার উপর পূর্ণ আস্থা আছে বলে জানিয়েছেন হরমীত। পটিয়ালা কোর্ট ইতিমধ্যেই হরমীতের বিরুদ্ধে শুনানি শুরু করেছে। ধর্ষণ মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে যদিও ব্যর্থ হরমীত। 

গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্যমেরও শিরোনামে জায়গা করে নেন হরমীত। ওই দিন সকালেই ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। কিন্তু থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করে হরমীতের সহযোগীরা। হরমীত নিজেও পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন বলে জানা যায়। এক পুলিশকর্মী বাধা দিতে গেলে, তাঁকে চাপা দিয়ে বেরিয়ে যায় দু’টি SUV গাড়ি। সেই যে পুলিশের হাত ছাড়িয়ে স্কর্পিও গাড়িতে চেপে পালান হরমীত, তার পর থেকে খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁর। যদিও হরমীতের দাবি, তিনি না পালালে ভুয়ো এনকাউন্টারে মেরে ফেলা হতো তাঁকে।

হরমীতের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, প্রতারণা, অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শনের মামলা রয়েছে। এক মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।  জানান, বিবাহবিচ্ছিন্ন বলে নিজের পরিচয় দেন হরমীত। দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাঁর কাছ থেকে যৌন সুবিধা ভোগ করেন বিধায়ক। তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়, নোংরা মেসেজও পাঠাতে শুরু করেন। 

এফআইআর-এ বলা হয়, ৪৫ বছর বয়সি ওই মহিলা বিবাহবিচ্ছিন্না। এক কন্যা বিদেশে থাকেন। হরমীতের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয় ২০১৩ সালে। ২০২১ সাে লুধিয়ানার গুরুদ্বারে বিবাহবন্ধনেও আবদ্ধ হন তাঁরা। কিন্তু ২০২২ সালে সানৌর থেকে যখন প্রার্ধী হন গুরমীত, নির্বাচনী হলফনামায় প্রথম স্ত্রীর নামই লেখেন। সেই নিয়ে অশান্তি শুরু হয় দু’জনের মধ্যে। হরমীতকে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য় পীড়াপীড়ি শুরু করেন ওই মহিলা।

হরমীতের সঙ্গ আম আদমি পার্টিরও বোঝাপড়া হচ্ছিল না বলে খবর আসছিল। বন্যা পরিস্থিতিতে নিজের সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মানকে। দলের সমালোচনা করায় তাঁর নিরাপত্তাও উঠে যায়। আর তাতেই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলছেন হরমীত।