নয়াদিল্লি: আবগারি দুর্নীতি মামলায় ছ'মাসের জেলযাপন। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক মুখে জামিন মঞ্জুর হল । বুধবার সন্ধেয় শেষ পর্যন্ত দিল্লির তিহাড় জেল থেকে বেরিয়ে এলেন Aam Aadmi Party-র নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ (Sanjay Singh)। কিন্তু জেলমুক্তির উদযাপন নয়, তিহাড় থেকে বেরিয়েই সংগ্রামের ডাক দিলেন তিনি। জানালেন, জেলের তালা একদিন ভাঙবেই। নেতারা সকলে বেরিয়ে আসবেন বলে বিশ্বাস তাঁরা। (Delhi liquor Policy Case)
দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত অক্টোবর মাসে সঞ্জয়কে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সরাসরি তিনি দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন, অপরাধের আশ্রয় নিয়েছেন এবং ২ কোটি টাকার ঘুষও নিয়েছেন বলে দাবি করে ED. কিন্তু মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলাকালীন ED জানায়, সঞ্জয়ের কাছ থেকে কোনও টাকা উদ্ধার হয়নি। ঘুষের টাকা কোথায় গিয়েছে, তা তদন্তপ্রক্রিয়া চলাকালীনই বেরিয়ে আসবে। সঞ্জয়কে আর জেলে রাখার প্রয়োজন নেই।
তবে গতকাল জামিন পেলেও, বুধবারই জেল থেকে বেরোলেন সঞ্জয়। তাঁকে স্বাগত জানাতে সেই সময় তিহাড়ের বাইরে ভিড় উপচে পড়ছে। দলের কর্মী-সমর্থকরা তো বটেই, কাতারে কাতারে ভিড় জমান সাধারণ মানুষও। তিনি বেরনো মাত্রই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন সকলে। শুরু হয় পুষ্পবৃষ্টি, বাজনা বাজানো। তাঁর কাছে পৌঁছনোর জন্য শুরু হয়ে যায় ঠেলাঠেলি। শেষ পর্যন্ত গাড়ির মাথায় উঠে বক্তৃতা করেন সঞ্জয়। কিন্তু গোড়াতেই উচ্ছ্বাস-উদযাপন নিয়ে আপত্তি তোলেন তিনি।
এদিন সঞ্জয় বলেন, "এটা উদযাপনের সময় নয়। এটা সংগ্রামের সময়। আমাদের দলের সবচেয়ে বড় নেতা অরবিন্দ কেজরিয়াল জেলে রয়েছেন। জেলে রয়েছেন মণীশ সিসৌদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈন। তাঁদের জেলবন্দি করে রাখা হয়েছে। আমি নিশ্চিত, একদিন না একদিন জেলের তালা ভাঙবেই। ওঁরা বেরিয়ে আসবেনই। তাই বলছি, এখন উদযাপনের সঠিক সময় নয়, লড়াই করার, সংগ্রামে নামার সময়।"
তিহাড় থেকে বেরিয়েই এদিন সটান কেজরিওয়ালের বাসভবনে যান সঞ্জয়। কেজরিওয়ালেপর স্ত্রী সুনীতা কেজরিওয়াল এবং পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। সঙ্গে ছিলেন সঞ্জয়ের স্ত্রী অনিতা সিংহ এবং তাঁদের কন্য়াও। এর পর দিল্লিতে দলের সদর দফতরেও যাওয়ার কথা তাঁর। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর আগের মতোই রাজনৈতিক কাজকর্মে যোগ দিতে পারবেন সঞ্জয়। তবে তাঁকে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে আদালত।
আদালত জানিয়েছে, জামিনে বাইরে থাকাকালীন আবগারি দুর্নীতি মামলায় নিজের ভূমিকা নিয়ে কোনও কথা বলতে পারবেন না সঞ্জয়। ২ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ড এবং সিকিওরিটি বন্ড জমা দিতে হবে তাঁকে। আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশ ছেড়ে কোথাও যেতে পারবেন না। পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকার বাইরে গেলেও তদন্তকারীদের জানাতে হবে তাঁকে।