নয়াদিল্লি: বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার পথে বা অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন যে কেউ। সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে বা আহত হলে, ক্ষতিপূরণের টাকা প্রাপ্য তাঁর পরিবারের। নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৯২৩ সালের কর্মচারী ক্ষতিপূরণের আইনেই ক্ষতিপূরণের কথা স্পষ্ট ভাবে বলা রয়েছে বলে সাফ জানাল শীর্ষ আদালত। (Supreme Court)
মঙ্গলবার একটি মামলার শুনানি চলছিল আদালতে। বিচারপতি মনোজ মিশ্র এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথন মামলার শুনানি করছিলেন। সেখানে এক নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যুর মামলা নিয়ে আলোচনা চলছিল। কর্মস্থল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে, অফিস আসার পথে মৃত্যু হয় তাঁর। নিয়ম মেনে কমিশনার ফর ওয়র্কমেনস কমিশন ওই নিরাপত্তরক্ষীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ পেতে সাহায্য করে। কিন্তু বিমা সংস্থার আবেদন মেনে হাইকোর্ট সেই ক্ষতিপূরণ ফিরিয়ে নেয়। জানায়, অফিস যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা ঘটলে, তা চাকরির অন্তর্ভুক্ত হয় না। কর্মস্থলে যেহেতু পৌঁছননি ওই নিরাপত্তারক্ষী, তা ক্ষতিপূরণের আওতায় পড়ে না বলে জানানো হয়। (Employees’ Compensation for Accident)
হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মৃতের পরিবারের লোকজন। মঙ্গলবার ওই মামলার শুনানি করতে গিয়ে বিচারপতিরা জানান, অফিস যাওয়ার পথে যদি দুর্ঘটনায় মারা যান কেউ, শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের আওতায় পড়ে। তাঁরা জানান, কর্মস্থলে যাওয়ার পথে বা কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটলে, তা ১৯৪৮ সালের Employees’ State Insurance Act-এর আওতায় পড়ে।
আদালত জানিয়েছে, বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে বা সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটলে, তার সঙ্গে কর্মস্থলের সংযোগ থাকে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কল্যাণে, তাঁদের অধিকার রক্ষার্থেই শ্রম আইন চালু হয়েছিল। তাই এক্ষেত্রে কোনও ধন্দ থাকা উচিত নয়। ওই নিরাপত্তারক্ষীও কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। ফলে ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য তাঁর।
যে মামলার প্রেক্ষিতে এই রায় দিল আদালত, সেটি ২০০৩ সালের ২২ এপ্রিলের। শাহু সম্পতরাও জাধবর নামের চিনিকলের এক নিরাপত্তা রক্ষী কাজে বেরিয়েছিলেন। রাত ৩টে থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত ডিউটি ছিল তাঁর। নিজের মোটর সাইকেলে চেপেই যাচ্ছিলেন শাহু। কিন্তু কারখানা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যান তিনি। কর্মচারী ক্ষতিপূরণ আইনের আওতায় আবেদন জানালে তাঁর পরিবারকে ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ১৪০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, ১২ শতাংশ সুদও পায় ওই পরিবার। কিন্তু বিমা সংস্থা এর বিরুদ্ধে আদালতে যায়।