মুম্বই: বৃহৎ ইস্পাত কোম্পানি আর্সেলরমিত্তালের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন কোম্পানির বর্তমান প্রেসিডেন্ট, সিএফও ও আর্সেলরমিত্তাল ইউরোপের সিইও আদিত্য মিত্তাল।


১৯৭৬ সালে এই কোম্পানির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন লক্ষ্মী এন মিত্তাল। তিনি ছিলেন কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও। আদিত্য মিত্তাল সিইও পদে উন্নীত হওয়ায় লক্ষ্মী মিত্তাল হবেন এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান।


এই প্রসঙ্গে লক্ষ্মী মিত্তাল বলেছেন,  ২০২০-তে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও আর্সেলর মিত্তাল ২০২১ সাল তুলনামূলকভাবে জোরাল অবস্থায় শুরু করেছে। বেশ কিছু কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয়। তাই এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যানের রূপান্তরের এটাই সঠিক সময়। কোম্পানির চিফ এক্সিকিউটিভ পদের জন্য আদিত্য মিত্তাল স্বাভাবিক ও সঠিক বাছাই বলে বোর্ড সহমত প্রকাশ করেছে।


লক্ষ্মী মিত্তালই বোর্ড অফ ডিরেক্টর্সের নেতৃত্বে থাকবেন এবং সিইও ও ম্যানেজমেন্ট টিমের সঙ্গে একযোগে কাজ করবেন।


লক্ষ্মী মিত্তাল বলেছেন, ১৯৯৭-তে তিনি কোম্পানিতে যোগদানের পর আমরা একযোগে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি। আর সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তিনি দক্ষতার একযোগে কোম্পানির কাজকর্ম সামলাচ্ছেন। ব্যবসা সম্পর্কে তাঁর অতুলনীয় জ্ঞান রয়েছে এবং বিশ্বের প্রথমসারির ইস্পাত কোম্পানি থাকার জন্য কোম্পানি কীভাবে রূপান্তরের পথে এগোবে সে বিষয়ে তাঁর স্পষ্ট ধারনা রয়েছে। এক্সিকিউটিভ হিসেবে তিনি কোম্পানি পরিচালনার কার্যভার গ্রহণ করবেন। তবে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে একযোগে কাজ চালিয়ে যাব। কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের লক্ষ্যে আমি দায়বদ্ধ এবং ব্যপৃত থাকব। আমি পরবর্তী পর্বের দিকে তাকিয়ে রয়েছি।


এই প্রক্রিয়ার ফলশ্রুতিতে জেনুইনো ক্রিস্টিনো চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার হবেন। তিনি কোম্পানিতে ২০০৩-এ যোগ দিয়েছিলেন এবং ফিনান্সের প্রধানের দায়িত্ব তিনি ২০১৬ থেকে সামলাচ্ছেন।


আদিত্য মিত্তাস বলেছেন, আর্সেলরমিত্তালের চিফ এক্সিকিউটিভ হিসেবে নিযুক্ত হওয়া একটা সম্মানের বিষয়। ইন্দোনেশিয়ার একটি গ্রিনফিল্ড রোলিং মিল থেকে মিস্টার মিত্তাল আর্সেলরমিত্তাল গড়ে তুলেছিলেন এবং পরবর্তী কালে তা বিশ্বের প্রথমসারির ইস্পাত কোম্পানি হয়ে ওঠে। এটা একটা অসাধারণ কৃতিত্ব এবং এত কাছ থেকে এই যাত্রা দেখা এবং তার অংশ হওয়া একেবারেই বিশেষ বিষয়। পরবর্তী পর্বের জন্য আমি উচ্ছ্বসিত। আর্সেলরমিত্তালে অসাধারণ সব ব্যক্তি রয়েছেন, এটি এমন একটি  কোম্পানি যেখানে উৎকৃষ্ট মানের জ্ঞান ও সক্ষমতা রয়েছে। সেইসঙ্গে কোম্পানির সামনে দুর্দান্ত সম্ভাবনা রয়েছে।


ইস্পাত ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান এল এন মিত্তাল তাঁর ভাইয়ের সঙ্গে আলাদা হয়ে মিত্তাল স্টিল শুরু করেন এবং ২০০৬-এ ফ্রান্সের আর্সেলরের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ ঘটান।


২০১৯-এ আর্সেলর ও নিপ্পন স্টিল এসার স্টিলের ৫.৯ বিলিয়ন ডলার অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ করেন। ওই কোম্পানি একদা শশী ও রবি রুইয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল।


২০১৯-এ ইস্পাতের নিম্নমুখী দাম ও কাঁচামালের বেশি দামের কারণে কোম্পানির মোট লোকসান ছিল ২.৫ বিলিয়ন ডলার। যদিও ২০২০-তে লোকসানের পরিমাণ প্রায় তিনগুণ কমিয়ে ফেলে। শেষ ত্রৈমাসিকে ২০২০-র শেষ ত্রৈমাসিকে কোম্পানি লাভের পথে ফেরে।


২০২০-তে এক শতাংশ পতনের পর কোম্পানি আশা করছে যে ২০২১-এ সারা বিশ্বে ইস্পাতের চাহিদা ৪.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হবে ৫.৫ শতাংশ।