নয়াদিল্লি: ভারতে নিজেদের কাজকর্ম বন্ধ করল আফগানিস্তানের দূতাবাস। ভারতে দূতাবাস চালিয়ে তাদের স্বার্থরক্ষা হচ্ছে না, কর্মী এবং পুঁজিরও অভাব দেখা দিয়েছে বলে যুক্তি দিয়েছে তারা। আপাতত কেয়ারটেকার হিসেবে ভারত সরকারই ওই দূতাবাসটির দেখভাল করবে বলে জানানো হয়েছে। দু'বছর পেরিয়ে গিয়েছে,  নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানে তালিবান (Taliban) ফের ক্ষমতায় আসীন হয়েছে। তার পরই ভারতে দূতাবাস বন্ধ হয়ে গেল। (Afghanistan Embassy)


আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি না দিলেও, ভারতে সে দেশের দূতাবাসটির কাজকর্ম অব্যাহত রাখতে অনুমতি দিয়েছিল দিল্লি। দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরফ গনির আফগানিস্তান ছেড়েছেন ২০২১ সালেই। এতদিন তাঁর আমলের রাষ্ট্রদূত এবং কর্মীরাই ভারতে আফগানিস্তানের দূতাবাস চালিয়ে আসছিলেন। কিন্তু আফগানিস্তানের বর্তমান তালিবান সরকার নিজেদের লোককে দূতাবাসের মাথায় বসাতে চেয়েছিলেন। সেই নিয়ে টানাপোড়েনের পর নিজেদের কাজকর্ম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল আফগান দূতাবাস। (Afghanistan Embassy)


এর আগে, চলতি বছরের গোড়ার দিকে ভারতে আফগান দূতাবাসের অন্দরে তীব্র টানাপোড়েন দেখা দেয়।  ভারতে নিজেদের দূতাবাসে, নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে যাবতীয় কাজকর্মের মাথায় বসাতে উদ্যত হয় তালিবান। ২০২০ সাল থেকে দূতাবাসে ট্রেড কাউন্সিলর হিসেবে কর্মরত কাদির শাহ সেই মর্মে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রককে চিঠিও লেখেন গতবছর। জানান, তাঁকে প্রধান নিযুক্ত করেছে তালিবান সরকার। কিন্তু দূতাবাসের তরফে বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, ভারতে আফগান দূতাবাসের নেতৃত্বে কোনও পরিবর্তন ঘটানো হয়নি। 


আরও পড়ুন: Shivaji Tiger Claw: সত্যি সত্যিই শিবাজি-ব্যবহৃত, নাকি গোটাটাই ‘গিমিক’, ভোটের আগে ‘বাঘ নখ’ নিয়ে জোর বিতর্ক মহারাষ্ট্রে


সিদ্ধান্তের নেপথ্য কারণ জানাতে গিয়ে, ভারত সরকারকেও কাঠগড়ায় তুলেছে আফগান দূতাবাস। বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ভারত সরকারের তরফে তেমন সহযোগিতা মেলেনি। ফলে আগের মতো কাজকর্ম চালিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছিল। নানা বাধা-বিঘ্ন আসছিল তাতে।  রবিবার সন্ধে পর্যন্ত সেই নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি দিল্লি।


শুধু তাই নয়, আফগানিস্তান এবং দেশের মানুষের স্বার্থরক্ষায় তারা সফল হয়নি বলেও বিবৃতিতে জানায় আফগান দূতাবাস। বলা হয়, 'খামতি অস্বীকারের উপায় নেই। ভারতের তরফে কূটনৈতিক সহযোগিতার অভাব এবং কাবুলে স্থিতিশীল সরকারের অনুপস্থিতির জন্য আফগানিস্তান এবং সেদেশের মানুষের প্রত্যাশাপূরণ করতে পারিনি আমরা'। আফগান কূটনীতিকদের ভিসার পুনর্নবীকরণ থেকে রোজকার কাজ চালাতে যথেষ্ট অসুবিধা হচ্ছিল বলেও জানানো হয়েছে।


শনিবাপর বিবৃতি জারি করা হলেও, ভারত থেকে পাততাড়ি গোটানোর প্রক্রিয়া আগেই শুরু করে দিয়েছিল আফগান দূতাবাস। ভারতে তাদের রাষ্ট্রদূত এবং শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরা আগেই ভারত ছেড়ে চলে গিয়েছেন। ইউরোপ এবং আমেরিকায় আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। বিদেশমন্ত্রকে সিদ্ধান্তও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল আগেই। কিন্তু ভারতে আফগানিস্তান থেকে আসা যে সমস্ত মানুষ রয়েছেন, চাঁদের নিরাপত্তা প্রদান করতে দিল্লির কাছে আর্জি জানিয়েছে আফগান দূতাবাস।