ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একের পর এক নিয়মের বেড়ায় তারা বেঁধেছে দেশবাসীকে। নিয়মের বজ্রআঁটুনিতে আটকা পড়েছে তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের মানুষের জীবন। সবথেকে দুরবস্থা আফগান নারীদের। চার দেওয়ালের অন্ধকারে তাদের ঠেলে দিয়েছে তালিবান উগ্রবাদী শাসকরা। এবার তালিবান শাসকদের আরেকটি কোপ পড়ল জনজীবনে। এবার বিশ্বের আনাচে কানাচে কী ঘটছে , তা জানার জানলাটুকুও করে দেওয়া হল বন্ধ।
গত কাল সোমবার (২৯শে সেপ্টেম্বর) থেকে ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আফগানিস্তানে। তালিবান সরকারের কড়া নির্দেশ। সারা দেশে বন্ধ রাখা হবে ইন্টারনেট। বিশ্বের বাতায়ন শক্ত করে খিল দিয়ে দেওয়া হোক এঁটে। এর পরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
দেশের রাজধানী কাবুল, উরুজগান, মাজার-ই-শরিফ এবং হেরাত সহ একাধিক শহরে ফাইবার-অপটিক ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যদিও এর কিছুক্ষণ পর পর্যন্ত মোবাইল ইন্টারনেট কিছু জায়গায় কাজ করছিল, কিন্তু সিগন্যাল টাওয়ার বন্ধ হওয়ার পর এটিও স্তব্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক সপ্তাহ ধরে আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি প্রদেশের ইন্টারনেটের স্পিড ছিল মন্থর। বারবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হচ্ছিল। এবার একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হল ইন্টারনেট পরিষেবা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কাবুল বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচলও ব্যাহত হয়েছে। ফ্লাইট ট্র্যাকিং পরিষেবা Flightradar24 অনুসারে , মঙ্গলবার কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে নির্ধারিত কমপক্ষে আটটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। কাবুলের বাসিন্দা অনেকেই বিবিসিকে জানিয়েছেন, গতকাল অফিসের কাজের শেষে , স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার পর ফাইবার-অপটিক ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়।
২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে, তালেবানরা তাদের ইসলামী শরিয়া আইনের ব্যাখ্যা অনুসারে অসংখ্য বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে তালেবানরা যে যে ভাবে বজ্রআঁটুনিতে মানুষের জীবন বেঁধে দিয়েছে, তার মধ্যে ইন্টারনেটের ফাইবার অপটিক কেবলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা অন্যতম। এর জেরে দেশজুড়ে ব্যাহত হয়েছে ব্যাঙ্কিং, টিকিট বুকিং সহ নানা পরিষেবা। মানুষের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। বিবিসি সূত্রে খবর, এই মাসের শুরুতে তারা নিয়ম করে বন্ধ করে দিয়েছে মহিলাদের লেখা বই ব্যবহার। কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে আর নারীদের লেখা বই ব্যবহার করা যাবে না। তালিবানরা মানবাধিকার এবং যৌন হয়রানির শিক্ষাদানকেও বেআইনি ঘোষণা করেছে।