পটনা: উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্তার (IAS Officer) কাছে স্কুলছাত্রীদের (School Girls) জন্য বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিনের (free sanitary Napkin) আর্জি জানিয়েছিলেন তিনি। আর্জিপূরণ তো দূর অস্ত, জুটেছিল কটাক্ষ (free condoms)। বিহারের (Bihar) সেই তরুণী, রিয়া কুমারীর দিকে এবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল প্যাড প্রস্তুতকারক (Pad Maker) একটি সংস্থা। বিনামূল্যে বছরখানেকের জন্য স্যানিটারি প্যাড জোগানোর প্রস্তাব দিয়েছে তারা।


প্রস্তাবের টুকিটাকি...
সংবাদংস্থা এএনআই-কে ওই প্যাড প্রস্তুতকারক সংস্থা জানিয়েছে, ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা এখনও বেশিরভাগ জায়গায় চাপাঢাকা নিয়ে রাখা একটি বিষয়। এটি বদলানো জরুরি। আমরা চাই আরও বেশি মহিলা ঋতুস্রাব নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলুন। রিয়া যে সাহস দেখিয়েছেন তাঁকে কুর্নিশ জানাচ্ছে ওই সংস্থা, সংযোজন সিইও-র তরফে। আরও বললেন, 'বছরখানেকের জন্য স্যানিটারি প্যাডের জোগান দিয়ে আসলে আমরা এই মান্ধাতার আমলের মানসিকতা এবং ভণ্ডামিকে চ্য়ালেঞ্জ করার যে সাহস, তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছি। পাশাপাশি, ওঁর স্নাতক পর্যন্ত লেখাপড়ার খরচও দেব আমরা।' 


বিতর্কের শুরু কোথায়?
আইএএস অফিসার হরজোৎ কউর ভামরার মন্তব্য ঘিরেই বিতর্কের সূত্রপাত। ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথ ভাবে আয়োজিত রাজ্যস্তরের একটি ওয়ার্কশপে ওই মন্তব্য করেন হরজোৎ।  স্কুলছাত্রীদের জন্য যাতে বিনামূল্যে সরকারের তরফে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা করা হয় সেই মর্মে আর্জি জানিয়েছিলেন রিয়া। তার প্রেক্ষিতে হরজোতের জবাব ছিল, 'বিনামূল্যের পরিষেবার অন্ত হয় না। সরকার এমনিতেই অনেক কিছু দিচ্ছে। আজ আপনারা একটি ন্যাপকিনের প্যাকটে মুফতে চাইছেন, কাল জিনস ও জুতোর ক্ষেত্রেও এক দাবি করবেন। আর তার পর যখন পরিবার পরিকল্পনা করার সময় আসবে, তখন হয়তো মুফতে কন্ডোমও চেয়ে বসতে পারেন।' উচ্চপদস্থ আমলার এমন 'অসংবেদনশীল' মন্তব্যের ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড় ওঠে। যেখানে মেয়েদের ঋতুকালীন স্বাস্থ্য় সচেতনতা বড়সড় চিন্তার কারণ, সেখানে এমন মন্তব্য হয় কী ভাবে? প্রশ্ন ধেয়ে আসে নান জায়গা থেকে। কেউ কেউ আবার বছরদুয়েক আগে স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশে ভাষণের কিছু অংশের কথাও মনে করান। সমস্ত ছুঁৎমার্গ ছুড়ে ফেলে সেখানেও প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, 'দেশের মা-বোনেদের স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকার।' আসে ‘সুবিধা’ ব্র্যান্ডের কথাও যেখানে কয়েক বছর থেকেই কম দামে স্যানিটারি প্যাডের সুবিধা পাচ্ছেন প্রত্যন্ত এলাকার মহিলারা, দাবি করেন মোদী। সেই এই প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকার নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণাও করা হয়। কিন্তু তার পরও কি ঋতুস্রাব ও ঋতুকালীন স্বাস্থ্য নিয়ে গড়পড়তা মানসিকতা বদলেছে? চাপের মুখে নিজের মন্তব্যের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেন ওই অফিসার। কিন্তু সেই অনুতাপ কতটা বহিরঙ্গের আর কতটা আন্তরিক? বলবে সময়।


আরও পড়ুন:পুজোর সময় চাকরিপ্রার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান বিক্ষোভে অনুমতি হাইকোর্টের