নয়াদিল্লি: প্রাধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখোমুখি হতে আপত্তি। তাই নীতি আয়োগের (NITI Aayog) বৈঠক বয়কটের ডাক দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর দেখাদেখি এ বার একই পথে হাঁটলেন অবিজেপি রাজ্য়ের অন্য মুখ্যমন্ত্রীরাও। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal), পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও-ও নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করছেন (Niti Aayog Meet)। 


শনিবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নীতি আয়োগের অষ্টম বৈঠক বসছে। তার আগেই বয়কটের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল অবিজেপি রাজ্যগুলি। সম্প্রতি দিল্লিতে মলা নিয়োগ এবং বদলি নিয়ে অধ্যাদেশ জারি করেছে কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে টপকে সেই অধ্যাদেশে নির্বাচিত সরকারের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার প্রদান করা হয়েছে। তার প্রতিবাদেই বৈঠক বয়কট কেজরিওয়ালের।


নীতি আয়োগ বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্ত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন কেজরিওয়াল। তাতে তিনি লেখেন, 'যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো নিয়ে ছেলেখেলে করছে কেন্দ্র। এমন পরিস্থিতিতে নীতি আয়োগ বৈঠকে যোগ দেওয়ার কী প্রয়োজন? নীতি আয়োগের লক্ষ্য হল ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে ধরে রাখা। কিন্তু গত কয়েক বছরে গণতন্ত্রের কাঠামোতেই আঘাত হানা হচ্ছে। যে ভাবে অবিজেপি রাজ্যের সরকার উল্টে দেওয়া হচ্ছে, তা দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়'।


আরও পড়়ুন: Rahul Gandhi: সাংসদপদ খুইয়ে হাতছাড়া ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্টও, ‘সাধারণ নাগরিক’ হলেন রাহুল, তিন বছরের জন্য পেলেন পাসপোর্ট


পঞ্জাবেও কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির সরকার রয়েছে। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্তও বৈঠক বয়কট করেছেন। গ্রামোন্নয়নের ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আটকে রাখা হয়েছে বলে তার প্রতিবাদে বৈঠকে যাচ্ছেন না ভগবন্ত। কারণ না জানালেও, বৈঠকে থাকছেন না বিজয়নও।


সার্বিক উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে নীতি আয়োগ। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে এই বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত থাকেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং রাজ্যের রাজ্যপালরাও। ২০৪৭-কে সামনে রেখে এ বারের বৈঠকে স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা রয়েছে।


২০৪৭-এর মধ্যে ভারতকে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরিত করতে একাধিক লক্ষ্যমাত্রাও রাখা হয়েছে। তার মধ্যে যেমন রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, তেমনই বিনিয়োগ, শিশদের পুষ্টি, দক্ষতা বৃদ্ধি, গতিশক্তি সংক্রান্ত বিষয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগেই একাধিক অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলেন। 


সবার আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতাই নীতি আয়োগ বৈঠক বয়কটের কথা জানান। তার পরিবর্তে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী এবং মুখ্যসচিবকে বৈঠকে যোগ দেওয়ানোর প্রস্তাব দেয় রাজ্যের সরকার। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে তা খারিজ করে দেওয়া হয়। যদিও কংগ্রেস শাসিত ছত্তীসগঢ় এবং হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরা নীতি আয়োগ বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন। তবে কংগ্রেসের কর্নাটক এভং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীরা বৈঠকে যাচ্ছেন বলে নিশ্চিত ভাবে খবর মেলেনি।


পঞ্জাবেও কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির সরকার রয়েছে। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্তও বৈঠক বয়কট করেছেন। গ্রামোন্নয়নের ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আটকে রাখা হয়েছে বলে তার প্রতিবাদে বৈঠকে যাচ্ছেন না ভগবন্ত।