নয়াদিল্লি: এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে হাতিয়ার করে তাঁর প্রশাসন ‘লাভ জিহাদ’ মোকাবিলায় আইন আনছে বলে যোগী আদিত্যনাথের ঘোষণার পর হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ জানালেন, তাঁরাও সেই রাস্তায় হাঁটছেন। লাভ জেহাদ মোকাবিলা করা দরকার, যাতে আমরা অল্পবয়সি মেয়েদের বাঁচাতে পারি। এজন্য় আইন পাশ বা অন্য কিছু করতে হলে করব। পরে তিনি ট্যুইটও করেন, ‘লাভ জিহাদ’ রুখতে আইনের কথা ভাবছে হরিয়ানা।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের অভিমত, স্রেফ বিয়ে করার জন্য ধর্ম পরিবর্তন বৈধ নয়। এই পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করেই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এলাহাবাদ হাইকোর্ট বলে দিয়েছে, বিয়ের জন্য ধর্ম পরিবর্তন জরুরি নয়। সরকারও লাভ জিহাদ মোকাবিলায় কাজ করবে, একটা আইন চালু করবে। যারা নিজেদের আসল পরিচয় গোপন করে আমাদের মেয়েদের অসম্মান করছে, তাদের হুশিয়ারি দিচ্ছি, তোমরা নিজেদের সংশোধন না করলে কিন্তু তোমাদের ‘রাম নাম সত্য হ্যায়’ যাত্রা শুরু হয়ে যাবে।



প্রসঙ্গত, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলিই ‘লাভ জিহাদ’ শব্দবন্ধটি চালু করেছে। তাদের দাবি, মুসলিম যুবকরা প্রেমের ফাঁদে ফেলে হিন্দু মেয়েদের বিয়ে করে চাপ দিয়ে তাদের ধর্ম বদলাচ্ছে। আদিত্যনাথের কড়া বার্তা এই প্রেক্ষাপটেই।
আবার খোদ হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টারও জানিয়েছেন, কেন্দ্র, হরিয়ানা সরকারও লাভ জিহাদ মোকাবিলার পন্থা খুঁজছে। হরিয়ানার ফরিদাবাদের বল্লভগড়ে ২১ বছরের একটি মেয়েকে গত ২৬ অক্টোবর প্রকাশ্যেই জোর করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে না পেরে গুলি করে খুন করে এক যুবক। এ ঘটনায় দুই হামলাকারী তৌসিফ ও রেহানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মেয়েটির পরিবারের দাবি, তাকে ধর্ম বদলে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। রাজি না হওয়ায় তার এই পরিণতি। খট্টার বলেন, বল্লভগড়ের ঘটনার সঙ্গে ‘লাভ জিহাদে’র যোগ আছে। তাই কেন্দ্র, রাজ্য সরকারও আইনি ব্যবস্থার কথা ভাবছে যাতে অপরাধী পালাতে না পারে, কোনও নিরপরাধ লোকের সাজা না হয়।
সম্প্রতি এক বিবাহিত দম্পতি রিট পিটিশন দাখিল করে আবেদন করে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট পুলিশ ও মেয়েটির বাবাকে নির্দেশ দিক, যাতে ওদের বিবাহিত জীবনে কেউ নাক না গলায়। কিন্তু হাইকোর্ট পিটিশন নাকচ করে বলে, স্রেফ বিয়ে করবে বলে ধর্ম বদলানো মেনে নেওয়া যায় না। আদালত জেনেছে, আবেদনকারী মেয়েটি গত ২৯ জুন ধর্ম বদলায় ৩১ জুলাই বিয়ে করে, যা থেকে স্পষ্ট, বিয়ে করার উদ্দেশেই সে ধর্ম বদলেছিল।
মুসলিম মেয়েটি হিন্দু ধর্ম গ্রহণের এক মাসের মধ্যে হিন্দু রীতি মেনে এক হিন্দু যুবককে বিয়ে করেছে, এটা জানার পরই হাইকোর্ট এহেন পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করে। পিটিশনে দম্পতি বলেছিল, তারা জুলাইয়ে বিয়ে করেছে, কিন্তু মেয়েটির পরিবারের লোকজন তাদের বিবাহিত জীবনে হস্তক্ষেপ করছে।