মুম্বই: আকাশে ওড়ার স্বপ্ন ছিল, ছুঁয়েও ছিলেন, কিন্তু আকাশেই শেষ হয়ে গেল যাত্রাপথ। আমদাবাদে বিমান বিপর্যয়ে মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ঘণ্টার বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন পাইলট সুমিত সবরওয়ালের। মঙ্গলবার আমদাবাদ থেকে মুম্বইয়ে বিমানে করে এল ক্যাপ্টেন সুমিতের কফিনবন্দি দেহ। অপেক্ষা করছিলেন সুমিতের বাবা পুষ্করাজ সবরওয়াল ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। শেষ বিদায়ে চোখের জল আটকাতে পারলেন না বাবা। বয়সের ভারে ন্যুব্জ পুত্রহারা পিতা ঈশ্বরের নাম করতে করতেই ভেঙে পড়লেন কান্নায়।
ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়াল, যিনি কি না অন্য পাইলটদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুমতিপ্রাপ্ত। প্রায় তিন দশক প্লেন চালানোর পর অবসরের দোরগোড়ায় ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক হাজার ঘণ্টারও বেশি বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা ঝুলিতে থাকা সহ পাইলট। আহমেদাবাদে ভেঙে পড়া বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন সুমিত সবরওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর। এত অভিজ্ঞ হাতে বিমানের রাশ থাকা সত্ত্বেও আছড়ে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার AI-171 অভিশপ্ত বিমান।
ডিএনএ পরীক্ষার পর সুমিতের দেহ শনাক্ত করা হয়েছিল। তার পর মঙ্গলবার সকালে মুম্বইয়ে বাড়িতে পৌঁছয় পাইলট সুমিতের দেহ। ১২ জুন আমদাবাদ থেকে ওড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ২৪২ জনকে নিয়ে লোকালয়ের উপর ভেঙে পড়ে সেই বিমান। মুহূর্তে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে চার দিক। কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, সে সব এখনও স্পষ্ট নয়।
দেশের অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিজিসিএ) সূত্রে খবর, বিমানের পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন সবরওয়াল। সঙ্গে ছিলেন সহ-পাইলট তথা ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর। ক্যাপ্টেন সবরওয়ালের ৮,২০০ ঘণ্টা বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা ছিল। সহ-পাইলটের বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল ১,১০০ ঘণ্টা। অর্থাৎ দুই পাইলটের সম্মিলিত উড়ানের অভিজ্ঞতা ছিল প্রায় ১০ হাজার ঘণ্টার কাছাকাছি। তা সত্ত্বেও আকস্মিক দুর্ঘটনা এড়ানো যায়নি।
অভিশপ্ত বিমানে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ড্রিমলাইনারে থাকা ১০ জন ক্রুর। কেবিন ক্রু দীপক পাঠক যেমন বিমানে ওঠার আগে মা-কে মেসেজে লিখেছিলেন, মা আমি বেরোচ্ছি, পৌঁছে জানাব। মার কাছে আর ছেলের পৌঁছনোর খবর এল না।