কলকাতা: স্বপ্ন ছিল, বিমান সেবিকা হবেন। সেই মতোই প্রস্তুতি নিয়েছিলেন ডোম্বিভিলির রাজাজি পাথের মাধবী বাংলো এলাকার মেয়ে রোশনি রাজেন্দ্র সংঘারে (Roshni Rajendra Songhare)। বয়স বছর ২৭।  অবশেষে স্বপ্নপূরণ হয়েছিল তাঁর। ২৭ বছরের মধ্যেই তিনি কাজ করে ফেলেছিলেন ভারতের দুটি নাম করা বিমান সংস্থায়। প্রথম চাকরি পেয়েছিলেন স্পাইস জেটে। সেখানে ২ বছর চাকরি করার পরে সুযোগ পান এয়ার ইন্ডিয়ায়। তাঁর এয়ার ইন্ডিয়ার পোশাক তাঁর প্রতিবেশীদের কাছেও ছিল ভীষণ গর্বের। বিমান সেবিকা হওয়ার পাশাপাশি, ট্রাভেল ইনফ্লুয়েন্সার ও ছিলেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে তাঁর ৫৪ হাজার ফলোয়ার্স ছিল। সব মিলিয়ে, সব জায়গাতেই উজ্জ্বল উপস্থিতি। কিন্তু ১২ জুন থেমে গেল সবটা। থমকে গেল ২৭ বছরের ঝলমলে একটা মেয়ের জীবন। আমদাবাদ থেকে লন্ডনগামী সেই অভিশপ্ত বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-এ বিমানসেবিকার কাজে নিযুক্ত ছিলেন রোশনি। মাটি থেকে বিমানে যখন চড়েছিলেন, তখন তাঁর চোখে ছিল আগামীর স্বপ্ন। কিন্তু মাটিতে যখন নেমে এলেন ফের, তখন তিনি একটা পোড়া দেহ মাত্র। প্রাণহীন। 

বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-র দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পাগলের মতো মুম্বই ছুটে গিয়েছিলেন রোশনির বাবা ও দাদারা। রোশনির বাবা পেশায় প্রযুক্তিবিদ। বছর ২ আগেই পেশার তাগিদে গোটা পরিবারকে নিয়ে ডোম্বিভিলি থেকে মুম্বই চলে এসেছিলেন রোশনি। সেখান থেকেই শেষ করেন পড়াশোনা, তারপরে যোগ দেন কাজে। পরিবার খুব একটা স্বচ্ছল ছিল না। রোশনিকে পড়াশোনা করার জন্যই লড়াই করতে হয়েছিল অনেক। অবশেষে সুখের মুখ দেখেছিলেন। পরিবার জানাচ্ছে, এই বছর বিয়ে করার কথা ছিল রোশনির। সেই মতোই পরিকল্পনা করছিলেন তিনি। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগেই থেমে গেল রোশনির জীবনের চাকা। 

রোশনির বাবা ও বড়ভাই আপাতত আমদাবাদে চলে গিয়েছেন। ডোম্বিভিলিতে রোশনির প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, দিন ২ আগেও ডোম্বিভিলিতে এসে ঘুরে গিয়েছিলেন রোশনি। দেখা করেছিলেন সবার সঙ্গে। কুলদেবতার মন্দিরে পুজো ও দিয়েছিলেন। ফিরে এসে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করার পরিকল্পনা করেছিলেন। ডোম্বিভিলির MLA রবীন্দ্র ছাবন প্রথম সোশ্যাল মিডিয়ায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান সেবিকা রোশনির মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আনেন।