নয়াদিল্লি: মাঝে প্রায় তিন ফারাক। যোগসূত্র কিন্তু একটি, সিট নম্বর 11A. আর তাতেই জীবন জুড়ে গেল এয়ার ইন্ডিয়ার দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমান থেকে বেঁচে ফেরা বিশ্বাসকুমার রমেশ এবং তাইল্যান্ডের অভিনেতা তথা গায়ক রুয়াংসাক জেমস লয়চুসাকের। ১৯৯৮ সালে বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরেন অভিনেতা জেমসও।  রমেশের মতো বিমানে 11A আসনে বসেছিলেন তিনি। (Ahmedabad Plane Crash)

গুজরাতের আমদাবাদের ভয়ঙ্কর বিমান দুর্ঘটনা শুধু গোটা দেশকেই নয়, গোটা পৃথিবীকে নাড়িয়ে দিয়েছে। দুর্ঘটনার বিবরণ জেনে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে উঠে আসা ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছেন সকলেই। আর এসবের মধ্যেই অতীতে ফিরে যান জেমস। নিজের জীবনের সেই দুর্বিসহ মুহূর্তে ফিরে যান তিনি। তবে রমেশের কথা জেনে চমকে উঠেছেন তিনি। (Ruangsak James Loychusak)

জেমস নিজেই এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। জানিয়েছেন, ১৯৯৮ সালের ১১ ডিসেম্বর বিমান দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। অবতরণের সময় Thai Airways-এর TG261 বিমানটি জলাজমিতে আছড়ে পড়েছিল। 

ওই বিমানে মোট ১৪৬ জন যাত্রী সওয়ার ছিলেন। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ১০১ জনের। এখন ৪৭ বছর বয়স জেমসের। ৪০ বছরের রমেশের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাচ্ছেন তিনি। জানিয়েছেন, ২৭ বছর আগে রমেশের মতো তিনিও বিমানের 11A আসনে বসেছিলেন। বিমানটি যখন নীচের দিকে ধাবিত হচ্ছিল, প্রাণ হাতে নিয়ে বসেছিলেন তিনিও।

ফেসবুকে জেমস লেখেন, ‘ভারতে বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা ব্যক্তি আমার মতোই 11A আসনে বসেছিলেন’।  ওই বিমানের বোর্ডিং পাস তাঁর কাছে না থাকলেও, সেই সময় সংবাদপত্রে ছাপা খবরের উল্লেখ করেছেন তিনি। বিমান দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফেরার পর একাধিক বার সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন জেমস। সেই ধাক্কা, সেই অপরাধবোধ আজও বয়ে চলেছেন বলে জানিয়েছেন। এমনকি দুর্ঘটনার পর প্রায় একদশক বিমানে ওঠেননি জেমস।

জেমস জানিয়েছেন, আমদাবাদ দুর্ঘটনায় রমেশের কথা জানতে পেরে গায়ে কাঁটা দেয় তাঁর। ওই দুর্ঘটনার পর তাঁর পুনর্জন্ম হয়। ভারতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। আমদাবাদ দুর্ঘটনার পর এখনও চিকিৎসাধীন রমেশ। কী করে বেঁচে ফিরলেন, এখনও বুঝতে পারছেন না তিনি।

২৭ বছর আগে জেমস এবং এখন রমেশ, দু'জের বেঁচে ফেরাকেই কেউ কেউ 'মিরাকল' বলছেন। সেই সঙ্গে, বিমানযাত্রার নিরাপত্তা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠছে। দু'জনেই যেহেতু 11A আসনে বসেছিলেন, তাই বিমানের ওই আসনটি সবচেয়ে সুরক্ষিত কি না, সেই প্রশ্নও উঠ আসছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমান বিশেষে আসনের বিন্যাস ভিন্ন প্রকারের হয়। তবে বিমানের পিছনের দিকের এবং ডানা বরাবর আসনকেই তুলনামূলক স্থিতিশীল বলে ধরা হয়।