নিউ ইয়র্ক: পরমাণু শক্তি নিয়ে গবেষণার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন আমেরিকার তদানীন্তন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্টকে। পরমাণু শক্তিতে আমেরিকার শক্তিধর হওয়ার নেপথ্যে ওই চিঠির ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের সেই চিঠিই এবার ৩.৯ মিলিয়ন ডলারে বিকোল, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। (Albert Einstein's Letter Auctioned)


১৯৩৯ সালে রুজভেল্টকে ওই চিঠি লেখেন আইনস্টাইন। রুজভেল্ট লাইব্রেরির সংগ্রহে বর্তমানে রয়েছে আসল চিঠিটি। চিঠিতে আসলে রুজভেল্টকে সতর্ক করেছিলেন আইনস্টাইন। জার্মানি পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে অতি শক্তিশালী বোমা তৈরি করা সম্ভব, তাই আমেরিকাকে উদ্যোগী হতে আবেদন জানান। (Albert Einstein Nuclear Weapon Letter)


জার্মানিতে অ্যাডল্ফ হিটলারের উত্থানের সময় ইউরোপ ছেড়ে পালিয়ে যান আইনস্টাইন এবং পদার্থবিদ লিও জিলার্ড। হিটলারের কাজকর্ম নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে আইনস্টাইন ওই চিঠি লেখেন। এর পরই পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজে গতি আনে আমেরিকা। আমেরিকার নিউ ইয়র্কের নিলাম সংস্থা Christie's Auction আইনস্টাইনের ওই চিঠিটিকে নিলামে তোলে সম্প্রতি। 






Christie's Auction-এর বিশেষজ্ঞ পিচার ক্লারনেট জানিয়েছেন, আইনস্টাইনের লেখা ওই চিঠি পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চিঠি। ১৯৩৯ সালে চিঠিটি লেখেন আইনস্টাইন। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়, তা ওই চিঠির দৌলতে। যুদ্ধ এবং মানব সভ্যতার ইতিহাস বদলে দেয় ওই চিঠি।


রুজভেল্টকে লেখা আইনস্টাইনের একটি মাত্রই প্রতিলিপিই রয়েছে। সেটিই নিলামে তোলা হয়েছে। এর আগে, মাইক্রোসফ্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পল অ্যালেনের সংগ্রহে ছিল। ২০০২ সালে সেটি কিনেছিলেন তিনি। তার আগে, প্রকাশক ম্যালকম ফোর্বসের সংগ্রহে ছিল চিঠিটি। তিনি চিঠিটি কেনেন লিও জিলার্ডের সম্পত্তি থেকে। 


আমেরিকার পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হয়ে ওঠার নেপথ্যে আইনস্টাইনের ওই চিঠির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পরবর্তীতে ওই চিঠি নিয়ে আক্ষেপ করেছিলেন আইনস্টাইন। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে যোগদানকে নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল বলে উল্লেখ করেছিলেন। ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে আমেরিকা পরমাণু বোমা ফেলার পর নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছিলেন তিনি।


আরও পড়ুন: Typhoon Yagi: টাইফুন 'ইয়াগি'র তাণ্ডব মায়ানমারে, ৬০ বছরে সর্বাধিক বৃষ্টি, মৃত কমপক্ষে ৭৪, নিখোঁজ প্রায় ১০০