লখনউ: হিন্দু ধর্মে 'কন্যাদান'কে (Kanyadaan) একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হিসেবেই বিবেচনা করা হয়ে থাকে। বিয়ের সময় পাত্রীর বাবা পাত্রের হাতে তুলে দেন নিজের মেয়ের দায়িত্ব। বিয়ের রীতিতে এই কন্যাদানকে বিয়ের একটি অঙ্গ হিসেবেই মেনে চলা হয়। এবার এই রীতিকে 'জরুরি নয়' বলে জানাল এলাহাবাদ হাইকোর্ট (Allahabad High Court)।

  


হিন্দু বিবাহের আইনের উল্লেখ করে আদালত জানায়,  হিন্দু বিবাহ আইনে যে রীতির প্রয়োজন রয়েছে তা হল ‘সপ্তপদী’ বা সাত পাকে বাঁধার রীতি। এলাহাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, হিন্দু বিবাহ আইনে আবশ্যিক রীতি হিসাবে ‘সাত পাকে বাঁধা’-র উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বিয়ের সময়ে কন্যাদানের রীতি হিন্দু বিবাহে আইনে বিচার্য হিসেবে ধরা হয়নি। 


যদিও এখন কলকাতা-সহ বেশ কিছু শহরে হিন্দু মতের বিয়েতে বৈদিক নিয়মও মানা হয়। সেখানে কন্যাদানের রীতিটি কিন্তু নেই। বলা হয়ে থাকে ব্রাহ্ম বিবাহ ছাড়া প্রজাপতি বা গান্ধর্ব্য বিবাহের মতো অন্য পদ্ধতিতে কন্যাদানের কথা উল্লেখ নেই। 


কোন মামলার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে হাইকোর্ট? 


আশুতোষ যাদব নামে এক ব্যক্তি তাঁর শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হন ৷ তাঁর দাবি ছিল, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। তাঁর বিয়ে আইনত বৈধ নয়, কারণ হিন্দু বিবাহ আইন অনুসারে বিয়ের স্বীকৃতির জন্য 'কন্যাদান' রীতি প্রচলিত। তাঁর বিয়েতে তা হয়নি। আশুতোষ প্রথমে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হন। সেখানে তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তখন তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।


হাই কোর্টের বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, "হিন্দু বিবাহ আইনে বিয়ের অত্যাবশ্যক রীতি হিসাবে সাত পাকে বাঁধা বা সপ্তপদীর উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বিয়ের সময় কন্যাদান হয়েছে কি না তা বিচার্য নয়। তিনি আশুতোষের আবেদন খারিজ করে দেন।


আরও পড়ুন, রেলস্টেশনে জলের দরে বিকোবে আটা-চাল, কীভাবে পাবেন আপনি?


শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিথ্যা অপরাধের অভিযোগ এনে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন, এই অভিযোগে মামলা করেছিলেন আশুতোষ যাদব নামের এক ব্যক্তি। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে আশুতোষ আবেদনে জানান, হিন্দু বিবাহ আইন অনুসারে যে ‘কন্যাদান’-এর রীতি প্রচলিত, তা তাঁর বিয়েতে পালন করা হয়নি। প্রাথমিকভাবে তাঁর বিয়ের আইনত বৈধতা নেই, এই অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি চেয়ে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন যুবক। কিন্তু বিচারক তাঁর আর্জি মঞ্জুর করেননি। এরপর নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা করেন তিনি। 



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে