মুম্বই:   করোনা মোকাবিলা নিয়ে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের কড়া সমালোচনায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তাঁর কটাক্ষ, কোভিড মোকাবিলায় কাজ না করে কৃতিত্ব নিতেই ব্যস্ত কেন্দ্রীয় সরকার। এই 'সিজোফ্রেনিয়া'র কারণেই দেশজুড়ে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে করোনার দাপট। অমর্ত্য সেন বলেছেন, ‘বিশ্বকে বাঁচিয়ে দেবে ভারত, এমন একটা প্রচারের চেষ্টা হয়েছে। এর ফলে সমস্যা বেড়েছে, মানুষের জীবনের উপর যার প্রভাব পড়েছে।


করোনা অতিমারী মোকাবিলায় মোদি সরকারকে ‘দ্বিধাগ্রস্ত’ বলেও উল্লেখ করেছেন অর্মত্য। তিনি বলেছেন, এই অতিমারীর মোকাবিলায় শক্তি অনুযায়ী কাজ করতে পারেনি ভারত, কারণ সরকার ছিল দ্বিধাগ্রস্ত।


তাঁর তীর্যক মন্তব্য, ‘কাজ না করে কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা কম বুদ্ধির লক্ষণ, ভারত সেটাই করেছে। কেউ ভাল কাজ করলে, আপনা আপনিই সে কৃতিত্ব অর্জন করে।’ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথকে উদ্ধৃত করে এই  মন্তব্য করেছেন অমর্ত্য। মুম্বইয়ে একটি অনুষ্ঠানে গতরাতে এই মন্তব্য করেন অমর্ত্য।


উল্লেখ্য, ভারতে করোনাভাইরাসের মারণ দ্বিতীয় ঢেউয়ের তাণ্ডব চলছে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মারাও যাচ্ছেন অনেকেই। করোনার সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে বিভিন্ন রাজ্যেই জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। প্রথম ঢেউয়ে লকডাউনের জের কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। ফলে অসংখ্য মানুষ রুটি-রুজি হারিয়েছেন। একদিকে, সংক্রমণের আতঙ্ক, অন্যদিকে জীবিকার অভাবে অনেক মানুষই চরম সমস্যায় পড়েছেন। এরইমধ্যে করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছেন অমর্ত্য। তিনি বলেছেন, সরকার এতটাই সংশয়াচ্ছন্ন যে, করোনা মোকাবিলায় কাজ না করে গৃহীত ব্যবস্থার কৃতিত্ব নেওয়ার জন্যই ব্যস্ত।  এই সিজোফ্রেনিয়ার কারণে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ভারত নিজের শক্তি অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি। সরকার দ্বিধাগ্রস্ত মনোভাবের কারণেই এই সংকট মোকাবিলায় যথাযথ কাজ হয়নি। 
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বলেছেন, অতিমারীর মোকাবিলার ক্ষেত্রে ওষুধ উৎপাদন ক্ষমতা ও উচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য ভারত বেশ ভালো জায়গায় ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সরকার রোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া রোধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে তার কাজের কৃতিত্ব নিতেই বেশি আগ্রহী ছিল।এটা কিছু সিজোফ্রেনিয়ার ফল। 


অমর্ত্য সেন বলেছেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আগাম লক্ষ্মণ ও ট্রিটমেন্ট প্রোটোকলে পর্যালোচনার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। তিনি সার্বিকভাবে আর্থিক ও সামাজিক নীতি সহ স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বড়সড় গঠনমূলক পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।