নয়াদিল্লি: করোনা আক্রান্ত হলে ১০ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সংক্রমণের সম্ভাবনা প্রায় ৬০ শতাংশ কম। এমনই দাবি আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায়। মঙ্গলবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রথম চারমাসে ৮৫ শতাংশ কম থাকে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। সম্প্রতি করোনা আক্রান্তদের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। তার ভিত্তিতে দেখা যায়, যারা একবার করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি ১০ মাস পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডনের গবেষকরা নার্সি হোমে থাকা ২০০০ জন আবাসিক ও কর্মী সদস্যের কেস ফাইল নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। প্রায় ১০০ নার্সিহোমে অ্যান্টিবডি পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের ওপর নজর রাখা হয়েছিল। আবাসিক ও কর্মীদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের শরীরে অ্যান্টিবডি টেস্টের ফল পজিটিভ এসেছে, যার থেকে আগে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।
যে ৬৩৪ জন কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে চার আবাসিক ও ১০ কর্মী সদস্য পুণরায় আক্রান্ত হন। যেখানে ৯৩ আবাসিক ও ১১১ কর্মী সদস্য, যাঁদের কখনও করোনা সংক্রমণ হয়নি, কিন্তু সমীক্ষার সময়ে তাঁদের টেস্টের ফলাফল পজিটিভ এসেছে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যে আবাসিকরা করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের ১০ মাসের মধ্যে পুণরায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা, যাঁদের করোনা সংক্রমণ হয়নি, তাঁদের তুলনায় ৮৫ শতাংশ কম। কর্মীদের মধ্যে যাঁরা করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, তাঁদের যাঁরা করোনা আক্রান্ত হননি, তাঁদের তুলনায় ফের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৬০ শতাংশ কম।
গবেষণাকারী দলের প্রধান ড. মারিয়া ক্রুতিকোভ বলেছেন, এমন একটা সময়ে ফের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার ক্ষেত্রে এই স্বাভাবিক সুরক্ষা অত্যন্ত ভালো খবর। ইউসিএল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ ইনফরমেটিকসের ডক্টোরাল গবেষক ক্রুতিকোভ বলেছেন, কেয়ার হোমের আবাসিকদের আগের করোনা সংক্রমণ যে ফের আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সুরক্ষা দিতে পারে, তা খুবই স্বস্তিদায়ক। কারণ, এর আগে উদ্বেগ ছিল যে, বয়স বাড়ার সঙ্গে এই ব্যক্তিদের খুব ভালো প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম থাকতে পারে।
এর আগে মার্চে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল যে, সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বয়স্কদের ফের সংক্রমণের আশঙ্কা প্রবল। ওই একই গবেষণায় প্রথম সংক্রমণের পর ছয় থেকে এক বছরের মধ্যে ফের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম বলে জানানো হয়েছিল।
ল্যানসেটে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছিল, তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে পুণরায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা খুবই কম-মাত্র ১০ শতাংশ।