সঞ্চয়ন মিত্র, সৌমিত্র রায়, ব্রতদীপ ভট্টাচার্য : এ যেন পিসি সরকারের ম্য়াজিক। রেলের ওয়েবসাইটে চাকরিপ্রার্থীদের যে তালিকা জ্বলজ্বল করছিল,প্রকাশের কয়েকঘণ্টার মধ্যেই তা ভ্য়ানিশ! বদলে, ৮ দিন পর প্রকাশিত হল পরিবর্তিত নতুন তালিকা!



আর এতেই দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ঘিরে যখন উত্তাল রাজ্য়, বিজেপি চেপে ধরছে, তৃণমূলকে, তখন কেন্দ্রের অধীনস্থ রেলেও সেই দুর্নীতির ভয়ঙ্কর অভিযোগ! এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায়!

রেলেও নিয়োগ দুর্নীতি?

গত বছর সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ের গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের পরীক্ষা হয়। জানুয়ারি মাসে হয় ফিজিক্যাল এলিজিবিলিটি টেস্ট। এই দুই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নথি ভেরিফিকেশনের জন্য় একটি তালিকা প্রকাশিত হয়। ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৩, 
রেলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয় এই তালিকা। অদ্ভূতভাবে, প্রকাশের কয়েকঘণ্টার মধ্য়েই তা উধাও হয়ে যায় ওয়েবসাইট থেকে। ঠিক ৮ দিন পর, ৮ই ফেব্রুয়ারি ওয়েবসাইটে আবার তালিকা আপলোড করা হয়।

চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের অভিযোগ, প্রথম তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, এমন অনেকেরই নাম দ্বিতীয় তালিকায় নেই।
চাকরির আশায়, যেসব বেকার ছেলেমেয়েগুলোর মুখে হাসি ফুটেছিল, দ্বিতীয় তালিকা তাঁদের সেই হাসি কেড়ে নেয়! এমনই ৩০ জন চাকরিপ্রার্থী সেন্ট্রাল অ্য়াডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আগামী ১৪ই মার্চ রেল কর্তৃপক্ষকে সমস্ত নথিসহ হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল।

দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি বিচারাধীন। এনিয়ে আদালত যা নির্দেশ দেবে, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।  

আরও পড়ুন :


 একইসঙ্গে রাজ্য়ে ইডি ও সিবিআইয়ের শীর্ষ কর্তারা, কেন !

গরু এবং কয়লা পাচারের পর শিক্ষা। একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে ক্রমাগত জর্জরিত হয়ে পড়ছে রাজ্য। আদালতের মুখেও ভর্ৎসনার সুর। কার্যত শিক্ষা দফতরের একটা বড় অংশ দুর্নীতির অভিযোগে নয় সিবিআই , ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি, নয়ত জেলে। জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি ও পলাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য জেলবন্দি। তাঁর ছেলে সৌভিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি  করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে। তাঁর সূত্র ধরে উঠে আসছে একের পর এক নাম। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিদিনই বিরোধীরা হাতে নতুন হাতিয়ার পাচ্ছে। সেই সময় কেন্দ্রের অধীনে থাকা রেলের চাকরি পরীক্ষার ফলে দুর্নীতি সন্দেহ নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।