এক বছর আগের কথা, মুম্বাইয়ের একটি জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান ঘিরে তৈরি হয়েছিল এক সাংস্কৃতিক মুহূর্ত, যা প্রতিধ্বনিত হয়েছিল মহাদেশগুলি জুড়ে । ২০২৪ সালের ১২ জুলাই অনন্ত অম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের বিয়ে কেবল একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান ছিল না - এটি এমন একটি অনুষ্ঠান ছিল, যা ঐতিহ্যের সঙ্গে জাঁকজমকের মেলবন্ধন ঘটিয়েছিল। বিশ্বব্যাপী এই অনুষ্ঠান তার মাত্রা, প্রতীক ও নিখুঁত ঐশ্বর্যের জন্য প্রশংসা অর্জন করেছিল।

এমন একটি অনুষ্ঠান যা একটা প্রজন্মকে দর্শায়মুম্বাইয়ের জিও ওয়ার্ল্ড কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছিল শিল্পপতি মুকেশ ও নীতা অম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত ও বীরেন ও শৈলা মার্চেন্টের মেয়ে রাধিকা মার্চেন্টের বিয়ে। যেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন ভারত ও বিশ্বের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বরা। তারকা, রাষ্ট্রনায়ক ও রাজপরিবারের সদস্যরা এক ছাদের নীচে জড় হয়েছিলেন এখানে। যা এই অনুষ্ঠানকে একটি রাজকীয়  জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে পরিণত করেছিল।

উল্লেখযোগ্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন বলিউডের অভিজাত ব্যক্তিত্ব - শাহরুখ খান, সালমান খান, অমিতাভ বচ্চন এবং প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। পাশাপাশি কিম ও ক্লো কার্দাশিয়ান, জন কেরি, টনি ব্লেয়ার ও বরিস জনসনের মতো বিশ্বব্যাপী পরিচিত ব্যক্তিত্বরা ছিলেন এই অনুষ্ঠানের সাক্ষী। তাদের উপস্থিতি দেখিয়েছিল, কীভাবে এই অনুষ্ঠান সাংস্কৃতিক সীমানা অতিক্রম করে ভারতে বিশ্বব্যাপী তারকা সমাবেশের একটি নতুন মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করেছে।

মুম্বাইয়ের থালায় বেনারসের স্বাদজাঁকজমকের বাইরে এই বিয়ে ভারতের সমৃদ্ধ রান্নার ঐতিহ্যের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছে। এই তালিকায় উল্লেখযোগ্য উপাদান ছিল বারাণসীর বিখ্যাত কাশি চাট ভান্ডারের স্ট্রিট ফুড। পবিত্র শহর পরিদর্শনের সময় নীতা অম্বানি নিজেই ওই চাট বেছে নেন, যা এই অনুষ্ঠান উদযাপনের একটি আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে।

ANI-এর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে দোকানের মালিক রাকেশ কেশরী বলেন, “২৪ জুন নীতা অম্বানি আমাদের চাট ভান্ডারে এসেছিলেন, যেখানে তিনি টিক্কি চাট, টমেটো চাট, পালক চাট ও কুলফি ফালুদা খেয়েছিলেন। তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে বেনারসের চাট খুবই বিখ্যাত। তাকে পরিবেশন করতে পেরে আনন্দিত হয়েছিলাম।” মেনুতে টমাটর চাট, চানা কচোরি, পালক চাট, কুলফি ফালুদা ও দহি পুরির মতো প্রিয় খাবার ছিল, যা বিয়ের অতিথিদের জন্য আনন্দের পাশাপাশি স্মৃতিচারণের বিষয় হয়ে উঠেছিল।

এক ভালো লাগার মাইলস্টোন, একটি সাংস্কৃতিক প্রাপ্তিঅনেকেই এই বিয়েকে একটি "ভারতের নিজস্ব রাজকীয় বিবাহ" হিসাবে বর্ণনা করেছেন, যদিও অনন্ত-রাধিকার মিলন কেবল একটি বিলাসবহুল অনুষ্ঠান ছিল না। তার থেকেও বেশি কিছু ছিল এই বিয়ে। এটি ভারতের আধুনিক বৈশ্বিক আবেদনকে ঐতিহ্যের সঙ্গে জোড়ার পাশাপাশি ক্ষমতার প্রতিফলন ঘটিয়েছিল। নিউ ইয়র্ক টাইমস বলেছে, এই অনুষ্ঠান "বিশ্বকে [ভারতের] সোনালী যুগের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে", যেখানে এই মুহূর্তগুলি 'ন্যাশনাল আইডেনটিটি'-কে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে।

এই দম্পতি যখন তাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করছে, তখন কেবল ঐশ্বর্যের স্মৃতিই রয়ে যায়নি। বরং সেই বিয়ের আনন্দ, রং ও সাংস্কৃতিক গর্বের স্মৃতিও রয়ে গেছে, যা একটি স্থায়ী ঐতিহ্যের অংশ- যা এই বিয়েকে সম্মিলিত উদযাপনের মুহুর্তে পরিণত করেছে।