হায়দরাবাদ: লোকমানি বিশ্বাস করতে পারেননি। অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর এই প্রৌঢ়ার কাছে পুলিশ এসে বলে, তাঁর সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি কথা বলতে চাইছেন।


লোকমানি জানতেন না কে সেই ব্যক্তি। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি যখন বসলেন, তখন দেখলেন তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলছেন রাজ্যের ডিজিপি গৌতম সাওয়াং। তাঁকে ধন্যবাদ দিতে। তাঁকে স্যালুট করতে।


এই কদিনেই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে গোটা অন্ধ্রপ্রদেশের জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন লোকমানি। করোনা ও লকডাউনের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সামনে থেকে মানুষকে সচেতন ও তাঁদের প্রাণ বাঁচানোর কাজে নিরন্তর কাজ করে চলা পুলিশকে কোল্ড ড্রিঙ্কস বিতরণ করছেন লোকমানি। তাঁর সেই দানের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে।


একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পূর্ব গোদাবরী জেলায় রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের তিনি ঠাণ্ডা পানীয়র দুটি বড় বোতল দিচ্ছেন। এক পুলিশকর্মী তাঁর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন লোকমানি। মাসে আয় করেন সাড়ে তিন হাজারের মতো।





লোকমানির এই ব্যবহারে মুগ্ধ হন পুলিশকর্মীরা। তাঁর দেওয়া বোতল ফেরত দিয়ে উল্টে লোকমানির সন্তানদের জন্য তাঁরা আরও ২টি বোতল দেন। পাশাপাশি, পুলিশকর্মীরা প্রৌঢ়াকে বলেন মাঝেমধ্যে আসতে। কারণ, তিনি মানুষকে ভাল অনুপ্রাণিত করতে পারেন।


শনিবার, অন্ধ্রপ্রদেশের ডিজিপি গৌতম সাওয়াং ভিডিও কলের মাধ্যমে লোকমানিকে ধন্যবাদ জানান। বলেন, মায়ের স্নেহ স্বরূপ যেভাবে আপনি পুলিশকর্মীদের ঠাণ্ডা পানীয় বিরতণ করছিলেন, তা প্রশংসনীয়। আমি সেদিনই আমার সহকর্মীদের বলেছিলাম, আপনাকে খুঁজে বের করতে, যাতে আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে পারি।


ডিজিপি যোগ করেন, আপনার মতো মানুষের জন্যই প্রশাসন ও পুলিশ দিনরাত কাজ করে চলেছে। আপনাদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই পুলিশ রাস্তায় নেমে কঠোর পরিশ্রম করে চলেছে। সেই পুলিশকর্মীদের আপনি ঠাণ্ডা পানীয় খেতে দিয়েছেন বলে আপনাকে স্যালুট করছি।





এর আগে, তেলঙ্গনার তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী কেটিআর ওই ভিডিও ট্যুইট করে লেখেন, ওনার নাম বা উনি কোথায় থাকেন, জানি না। যা জানি তা হল, ওনার বিশাল হৃদয় রয়েছে। মাসে সর্বসাকুল্যে ৩ হাজার টাকা আয় করেন। তা সত্ত্বেও সামনের থেকে লড়াই করছেন যাঁরা, তাঁদের সাময়িক স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আপনাকে কুর্ণিশ।