ইসলামাবাদ: বন্যাবিধ্বস্ত (flood) দেশের ত্রাণ (relief) ও উদ্ধারের (rescue) কাজে এবার সেনার (army) সাহায্য চাইল পাকিস্তান (pakistan) সরকার (government)। এখনও পর্যন্ত এই ভয়াবহ বন্যার বলি ৯৮২ জন। গত এক দশকে কখনও পাকিস্তানে এমন বিপর্যয় দেখেছেন মনে করতে পারছেন না বাসিন্দারা। 


কী পরিস্থিতি?
বন্যার তোড়ে ৩ কোটি ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ বিধ্বস্ত। পরিস্থিতি সামলাতে দেশের সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছেন দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ। পাকিস্তানের সংবিধানের ২৪৫ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সেনা মোতায়েন করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন তিনি। ওই অনুচ্ছেদেই জরুরি পরিস্থিতিতে অসামরিক প্রশাসনকে সাহায্য করার জন্য সেনাবাহিনীকে আর্জি জানানো যায়। পরিস্থিতি বুঝে সেটাই প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছে পাক সরকার। মন্ত্রীর কথায়, 'সব কটি প্রাদেশিক সরকারই ২৪৫ নম্বর অনুচ্ছেদের আওতায় সেনা মোতায়েন করার আর্জি জানিয়েছিল যাতে অনুমোদন দিয়েছে অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক।' এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে তাতে শেষ ২৪ ঘণ্টাতেই ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে গোটা দেশে। বন্যার তোড়ে মোট জখম হয়েছেন ১ হাজার চারশো ছাপ্পান্ন জন। তাঁদের মধ্যে শেষ চব্বিশ ঘণ্টায় আহতের সংখ্যা ১১৩। 


বিপর্যস্ত পরিকাঠামো...
প্রাণহানির পাশাপাশি দেশের বড় অংশের পরিকাঠামোও কার্যত ভেঙে পড়েছে। ৩ হাজার ১৬১ কিলোমিটার রাস্তা এই মুহূর্তে জলের তলায়, ভেসে গিয়েছে ১৪৯টি সেতু। অসংখ্য ঘরবাড়ি নিশ্চিহ্ন। সরকারি হিসেব বলছে, সংখ্যাটি ৬ লক্ষ ৮২ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে সিন্ধ ও বালোচিস্তান প্রদেশের হাল সবচেয়ে খারাপ। এই দুই প্রদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় রেল-পরিষেবা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে পাকিস্তান সরকার। খারাপ আবহাওয়ার জন্য বালোচিস্তানের রাজধানী শহর কোয়েট্টায় সমস্ত উড়ান পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল শুক্রবার। সব মিলিয়ে ১১০টি জেলার ৫৭ লক্ষ বাসিন্দা এই মুহূর্তে আশ্রয়হীন। বর্ষার মরসুমে লাগামহীন বৃষ্টিতেই বানভাসি হয়েছে পাকিস্তানের অর্ধেকের বেশি এলাকা। দেশের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে শুক্রবারই একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তাতে একাধিক দেশের হাইকমিশনার এবং পদস্থ কূটনীতিবিদরাও ছিলেন। এখনও পর্যন্ত যা ক্ষয়ক্ষতির বহর, তার সঙ্গে ২০১০-১১ সালে হড়পা বানের তুলনা টানেন শাহবাজ। সে দেশের পরিবেশ মন্ত্রী শেরি রহমানের মতে, প্রত্যেক বছরই গড়ে তিন থেকে চার দফা তুমুল বৃষ্টি হয় পাকিস্তানে। কিন্তু এবার সেই পরিসংখ্যান পৌঁছে গিয়েছে আটে। আশঙ্কার কথা, এখানেই সেই বর্ষণ থামার পূর্বাভাস নেই। ফলে আরও বিপর্যয়ের ভয় থাকছে।  
তবে পাকিস্তানের পক্ষে আশার কথা একটাই। গত কালের বৈঠকে হাজির প্রত্যেক বিদেশি কূটনীতিবিদই সঙ্কটের এই সময়ে ইসলামাবাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন।     


আরও পড়ুন:ঝাড়খণ্ডের বিধায়কের থেকে টাকা উদ্ধারের তদন্তে অসমের ব্যবসায়ীকে আজ ফের তলব সিআইডি-র