নয়াদিল্লি: নয় নয় করে ৪৭ দিন ধরে মাথায় আবগারি দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি। আজও জামিন পেলেন না দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন নিয়ে শুনানি করলেও, আজ কোনও রায় দিল না  শীর্ষ আদালত। বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ কেজরিওয়ালের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করল না আজই। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গ্রেফতাররি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করেছিলেন কেজরিওয়াল। ৯ মে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানানো হয়েছে। (Arvind Kejriwal Bail) সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চলাকালীনই আবার এদিন ২০ মে পর্যন্ত কেজরিওয়ালের হেফাজতের মেয়াদ বাড়িয়েছে দিল্লির রাউস অ্য়াভেনিউ কোর্ট।


এর আগে, গত সপ্তাহে কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন মঞ্জুর করার ইঙ্গিত দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু আজ শুাননি শুরু হলে ED-র সঙ্গে দীর্ঘ সওয়াল-জবাব চলে আদালতে। কেজরিওয়ালের জামিনের তীব্র বিরোধিতা করে ED. শেষ পর্যন্ত মধ্য়াহ্নভোজের পর আদালত জানা, বৃহস্পতিবার অথবা আগামী সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হতে পারে, তাতে জামিন পেতেও পারেন কেজরিওয়াল, আবার নাও পেতে পারেন। জামিন পেলে কেজরিওয়ালকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকতে হবে, তিনি কোনও ফাইলে সই করতে পারবেন না বলেও জানায় শীর্ষ আদালত। ED-কে বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়ে আসতে বলা হয়েছে। (Delhi Liquor Policy Case) এই প্রেক্ষিতে কেজরিওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে জানান, জামিন পেলে কেজরিওয়াল কোনও ফাইলে সই করবেন না। সেই মর্মে বিবৃতিও দেবেন তিনি। কিন্তু তাঁর সরকারের কোনও কাজ বা প্রকল্প বন্ধ করতে নির্দেশ দিতে পারবেন না দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরও। 


এদিন সওয়াল জবাব চলাকালীন আদালত জানায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল ক্ষমতাসীন মুখ্যমন্ত্রী, পেশাদার অপরাধী নন। দেশে নির্বাচন চলছে, অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে কেজরিওয়াল গ্রেফতার হয়েছেন, যে কারণে নির্বাচনের আগে গ্রেফতারি নিয়ে AAP প্রশ্ন তুলছে বলে জানায় আদালত। কিন্তু কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী বলে তাঁকে আলাদা চোখে দেখা উচিত নয় বলে এদিন আদালতে যুক্তি দেয় ED.



আরও পড়ুন: Lok Sabha Election: লোকসভা নির্বাচনের মাঝেই বিজেপিতে যোগ অভিনেতা শেখর সুমন ও প্রাক্তন কংগ্রেস নেত্রী রাধিকা খেরার


আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ২১ মার্চ গ্রেফতার হন কেজরিওয়াল। দিল্লিতে তাঁর বসভবনে হানা দিয়ে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করে ED. এর পর দিল্লির তিহাড় জেলে ঠাঁই হয় তাঁর। এই গ্রেফতারির নেপথ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে গোড়া থেকেই দাবি করে আসছে কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকে সরাসরি আঙুল তুলে আসছে তারা।


মঙ্গলবার শুনানি চলাকালীন আদালতে তিরষ্কৃতও হয় ED. আদালতে এদিন ED-র হয়ে সওয়াল করছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেস এসভি রাজু। কেজরিওয়ালের জামিনের বিরোধিতা করেন তিনি। AAP নেতা সঞ্জয় সিংহ জামিন পাওয়ার পর মামলা নিয়ে যে যে মন্তব্য় করেছেন, তার উদাহরণও আদালতে তুলে ধরেন এসভি রাজু। আবগারি দুর্নীতির তদন্ত করতে দু'বছর সময় লেগে গেল কেন, প্রশ্ন তোলে আদালত। কোনও তদন্তকারী সংস্থার পক্ষেই এত সময় নেওয়া ভাল বিষয় নয় বলে জানানো হয়। 


আবগারি দুর্নীতি মামলার তদন্তে কবে প্রথম কেজরিওয়ালের নাম উত্থাপিত হয়, জানতে চায় আদালত। এর জবাবে এসভি রাজু জানান, ২০২৩ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম কেজরিওয়ালের নাম উঠে আসে বয়ানে। কিন্তু যে বয়ানের উল্লেখ করছে ED, তার সঙ্গে কেজরিওয়ালের কোনও সংযোগ নেই বলে জানায় আদালত। কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং গ্রেফতারির কারণ একই  বলে দাবি করে ED. আদালত যদিও সেই যুক্তি খারিজ করে দেয়। গ্রেফতারির জন্য প্রয়োজনীয় নথিপ্রমাণ ED দেখাতে পারেনি বলে জানায় আদালত।