নয়াদিল্লি: যোগ্যতার মাপকাঠিতে উতরে যাওয়া সত্ত্বেও, প্রাপ্য মর্যাদা মেলেনি বলে অভিযোগ ছিল। সেই নিয়ে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতেরও দ্বারস্থ হয় আম আদমি পার্টি (AAP National Party Status)। আর তার ঠিক পরই জাতীয় দল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) দল। ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, তৃণমূল এবং CPI-এর জাতীয় স্বীকৃতি প্রত্যাহার হল যে দিন, সেই দিনই জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেল AAP.


জাতীয় দলের স্বীকৃতি আটকে রাখা হয়েছে বলে এর আগে কর্নাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় AAP. কর্নাটক হাইকোর্টে বিষয়টি নিয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন সেখানে আপ-এর আহ্বায়ক পৃথ্বী রেড্ডি। তাঁর যুক্তি ছিল, জাতীয় দল ঘোষিত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে তাঁদের দল। তার পরও নির্বাচন কমিশন প্রাপ্য মর্যাদা দিতে অস্বীকার করছে।


এর পর ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেয় আদালত। তার মধ্যে কমিশনকে সিদ্ধান্তগ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।  তার আগে, সোমবারই AAP-কে জাতীয় দল ঘোষণা করল কমিশন। এর ফলে, আসন্ন কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে AAP. আবার ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী শিবিরের কাণ্ডারী হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে আরও সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে গেল তারা।


জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন কেজরিওয়াল। ট্যুইটারে তিনি লেখেন, ‘এত স্বল্প সময়ের মধ্যে জাতীয় দলের মর্যাদা? এটা অত্যাশ্চর্য ঘটনার থেকে কোনও অংশে কম নয়। সকলকে অভিনন্দন। দেশের  কোটি কোটি মানুষ আমাদের এখানে পৌঁছতে সাহায্য করেছেন। দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল’।


আরও পড়ুন: Spyware: বিরোধী শিবির, বিচারব্যবস্থার উপর নজরদারি, ৯৬০ কোটিতে আরও এক স্পাইওয়্যার! ফের কাঠগড়ায় কেন্দ্র


জাতীয় দলের স্বীকৃতি হাতে আসায় সাংগঠনিক ভাবেও সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে গেল AAP. এ বার একচি মাত্র প্রতীক চিহ্নে দেশের যে কোনও রাজ্যের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে তারা।  নির্বাচনী প্রচারে বৈদ্যুতিন মাধ্যমে নিখরচায় সম্প্রচারের অধিকার থেকে দিল্লিতে কার্যাল. খোঁলার অধিকারও প্রাপ্তি হল।  বাকি দলগুলির মধ্যে বর্তমানে বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম, বহুজন সমাজ পার্টি এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টিই এই সুবিধা পায়।


এর আগে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলাফলের জন্য NCP, তৃণমূল এবং CPM-কে শোকজ নোটিস ধরিয়েছিল কমিশন। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর তাই গোয়া, ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ের মতো রাজ্যে শিকড় বিস্তারে উদ্যোগী হয় তৃণমূল। কিন্তু কোথাও-ই আশানুরূপ ফল করতে পারেনি তারা। তাতেই জাতীয় দলের স্বীকৃতি হারাতে হল।


রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কমিশনের এই ঘোষণায় জাতীয় রাজনীতিতে অনেকটাই এগিয়ে গেল AAP. বিজেপি বিরোধী শিবিরে বেশ কিছু দিন ধরেই নিজেদের দর বাড়ানোর চেষ্টা করছিল তারা। জনমানসেও বিজেপি-র বিকল্প হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার প্রচেষ্টা চোখে পড়ছিল। কিন্তু তাঁকে কড়া টক্কর দিতে পারতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী জোটের মুখ কে হবেন, তা নিয়ে চাপা প্রতিযোগিতা চলছিল। জাতীয় দলের স্বীকৃতি পেয়ে আপাতত বাকিদের পিছনে ফেললেন কেজরিওয়াল।