নয়াদিল্লি: পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হওয়া দেশের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে। আবগারি দুর্নীতি মামলায় এই নিয়ে আম আদমি পার্টির তিন নেতা গ্রেফতার হলেন। তবে গ্রেফতার হলেও, কেজরিওয়ালই মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন, জেল থেকে সরকার চালাবেন বলে জানিয়েছে AAP. (Arvind Kejriwal Arrested)
এর আগে, জানুয়ারি মাসে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা JMM নেতা হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করে এই ED-ই। তবে গ্রেফতারির ঠিক আগের মুহূর্তে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন হেমন্ত। সেই নিরিখে পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হওয়া প্রথম মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। তবে কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে সন্ধেতেই ইঙ্গিত মেলে। গ্রেফতারি থেকে রক্ষাকবচ চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে এদিনই তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। তার পরই তাঁর বাড়িতে পৌঁছে যায় ED এবং দিল্লি পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতারের পরিকল্পনা থেকেই ED এবং পুলিশ পৌঁছেছে বলে সেই সময়ই জানায় AAP. (Allegations against Kejriwal)
পর পর ন'বার ডেকে পাঠালেও কেজিরওয়াল হাজিরা দেননি বলে দাবি ED-র। আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজিরওয়ালকে 'ষড়যন্ত্রকারী' হিসেবেও উল্লেখ করে ED. কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানায়, ভারত রাষ্ট্র সমিতির নেত্রী কে কবিতার সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন কেজরিওয়াল। AAP নেতা মনীশ সিসৌদিয়া, সঞ্জয় সিংহ এই মামলায় ইতিমধ্যেই জেলে রয়েছেন।
দিল্লি সরকার আবগারি নীতি তুলে নিয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে ED-র দাবি, রাজধানীতে সুরাবিক্রির নীতনি এমন ভাবে নির্ধারণ করা হয়েছিল, যাতে বাছাই করা কিছু সংস্থা এবং ব্যবসায়ী লাভবান হন। এ ব্যাপারে দক্ষিণ ভারতের বিশেষ একটি লবি-ও প্রভাব খাটিয়েছিল। এর পরিবর্তে AAP-এর তহবিলে ১০০ কোটি টাকা জমা দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়।
ED-র দাবি, সাক্ষীদের বয়ানে বারংবার কেজরিওয়ালের নাম উঠে এসেছে। অভিযুক্তরাও তাঁর নাম নিয়েছেন একাধিক বার। চার্জশিট এবং রিম্যান্ড নোটেও সেকথা উল্লেখ করেছে ED. তদন্তকারীদের দাবি, কেজিরওয়ালের বাড়িতে নিয়মিত আনাগোনা ছিল অন্যতম অভিযুক্ত বিজয় নায়ারের। আবগারি নীতি নিয়ে কেজরিওয়ালের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা হয় তাঁর। এমনকি নায়ারই Indospirit-এর মালিক সমীর মহেন্দ্রুর সঙ্গে কেজরিওয়ালের সাক্ষাৎ করিয়ে দেন বলে জানিয়েছেন তদন্তাকারীরা।
ED-র দাবি, একিট বৈঠকে আলোচনা সফল হয়নি। এর পর ভিডিও কলে মহেন্দ্রু এবং কেজরিওয়ালের কথা হয়। মহেন্দ্রুকে কেজিরওয়াল জানান, নায়ার তাঁর সন্তানের মতো। চোখ বন্ধ করে তিনি নায়ারকে বিশ্বাস করেন। দক্ষিণের লবি থেকে রাঘব মাগুন্টা নামের একজনের নামও উঠে আসে। বর্তমানে তিনি সাক্ষী। তদন্তকারীদের মাগুন্টা জানান, তাঁর বাবা YSR কংগ্রেসের সাংসদ। আবগারি নীতি নিয়ে তিনিও কেজরিওয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।