নয়াদিল্লি: আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতারির পর ঠাঁই হয়েছে তিহাড়ে। সেখানে রাতভর উসখুস করে কাটলেও, সকালে উঠে ধ্যান করলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)। সোমবার দিল্লির তিহাড়ের ২ নম্বর ঠাঁই হয় কেজরির। জেল সূত্রে খবর, রাতভর উসখুস করেন কেজরিওয়াল। অস্থিরও বোধ করছিলেন তিনি। এক চিলতে জায়গায় অস্বস্তি হলেও, সেই নিয়ে কোনও অনুযোগ করেননি তিনি। তবে টেবিলে এনে রেখেছিলেন ইসবগুল, গ্লুকোমিটার, সুগার সেন্সর এবং লজেন্স, যাতে সুগারের মাত্রা নীচে নেমে গেলে মুখে দিতে পারেন। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে মোটামুটি ঠিক রয়েছেন (Tihar Jail)।
দিল্লির তিহাড়ের ২ নং জেলে রয়েছেন কেজরিওয়াল। সেখানে 'বিচারাধীন বন্দি ৬৭০ নম্বর' নয়া পরিচয় হয়ে উঠেছে তাঁর। জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতভর কুঠুরির মধ্যে পায়চারি করছিলেন কেজরিওয়াল। সিমেন্টের বাঁধানো জায়গায় মাত্র কিছু ক্ষণের জন্যই শুয়েছিলেন। সেখানে তাঁর নিজস্ব শয্যাই রাখা আছে, যা অন্য বন্দিদের থেকে আলাদা। কুঠুরির আয়তন একেবারে ছোট। তবে কোনও অনুযোগ করেননি কেজরিওয়াল। কেজরিওয়ালের কুঠুরিতে একটি মশারিও দেওয়া হয়েছে, যাতে মশার কামড় থেকে বাঁচতে পারেন। তিহাড়ের সব বন্দিই ওই মশারি পান। মশারির মধ্যে ঘুমাতেও কেজরিওয়ালের অস্বস্তি হয় বলে খবর।
তবে মঙ্গলবার সকালে তুলনামূলক শান্ত ছিলেন কেজরিওয়াল। সকালে উঠে প্রথমে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ধ্যান করেন তিনি। এর পর যোগব্যায়াম করেন। সকাল ৬টা বেজে ৪০ মিনিট নাগাদ প্রাতরাশে দেওয়া হয় পাউরুটি, চা। দুপুরে খাওয়ার পর ৩টের মধ্যে কুঠুরিতে ঢুকে যেতে হয় বন্দিদের। সন্ধে ৫.৩০-এর মধ্যে তিহাড়ে বন্দিদের নৈশভোজ দিয়ে দেওয়া হয়। এর পর রাত ৭.৩০-এর মধ্যে কুঠুরিতে ঢুকে যেতে হয়। সকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত টিভি দেখার সুযোগ রয়েছে তিহাড়ে।
আরও পড়ুন: Mahua Moitra: এবার আর্থিক তছরুপের মামলা, মহুয়ার বিরুদ্ধে নয়া ধারা আনল ED
সোমবার ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয় কেজরিওয়ালকে। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সেখানে থাকার কথা তাঁর। এই নিয়ে Aam Aadmi Party-র চার জন নেতার ঠাঁই হল তিহাড়ে। কেজরিয়ালের আগে দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় তিহাড়যাত্রা হয়েছে সত্যেন্দ্র জৈন, সঞ্জয় সিংহ এবং মণীশ সিসৌদিয়ার। কেজরিওয়াল যে ২ নং জেলে রয়েছেন, সেখানে এতদিন ছিলেন সঞ্জয়। মঙ্গলবারই তিনি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
এই মুহূর্তে তিহাড়ের ৬ নং জেলের মহিলা বিভাগে রয়েছেন আবগারি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত ভারত রাষ্ট্র সমিতির নেত্রী কে কবিতাও। সিসৌদিয়া রয়েছেন ১ নম্বর জেলে। প্রায় এক দশক পর জেলযাত্রা হল কেজরিওয়ালের। এর আগে ২০১১ সালে অন্না হাজারের সঙ্গে লোকপাল বিলের সমর্থনে আন্দোলন করার সময় গ্রেফতার হন কেজরিওয়াল। সেবার সাতদিন জেলে ছিলেন তিনি।
তবে ৫৫ বছর বয়সি কেজরিওয়ালের এবারের জেলযাত্রা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। ডায়াবিটিস রয়েছে তাঁর। আদালত বাড়িতে তৈরি খাবার খাওয়ার অনুমতি দিয়েছে তাঁকে। ওষুধও নিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। রক্তে শর্করা মাত্রার ওঠানামা দেখতে নিয়ে গিয়েছেন সুগার সেন্সর এবং গ্লুকোমিটারও। হাই প্রোফাইল রাজনীতিকরা বন্দি থাকায় তিহাড়ে বর্তমানে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি-র নজরদারি তো রয়েইছে, বাড়তি নিরাপত্তাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে তিহাড়ে।