নয়াদিল্লি: জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলায় কানহাইয়া কুমারের বিচারে সবুজ সঙ্কেত দিল দিল্লি সরকার। বাম ছাত্রনেতা তথা জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়া ও আরও কয়েকজন পড়ুয়ার বিরুদ্ধে ২০১৬-র ৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হওয়া এক অনুষ্ঠানে মিছিল ও রাষ্ট্রদ্রোহী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। ২০০২ এর সংসদ চত্বরে সন্ত্রাসবাদী হামলার মামলায় দোষী ঘোষিত আফজল গুরুর মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল সেদিন।
শুক্রবার দিল্লি পুলিশকে কানহাইয়ার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের এই ছাড়পত্র দিল অরবিন্দ কেজরিবাল সরকার।
দিল্লির এক আদালত দিল্লি পুলিশকে ৩ এপ্রিল স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিতে বলার পর দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিবাল প্রতিশ্রুতি দেন, ২০১৬ সালের রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলায় কানহাইয়ার বিচারের অনুমতি দেওয়া নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন। এর ৯দিন বাদে অবশেষে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল তাঁর সরকার। এই সংক্রান্ত ফাইলটি গত বছরের ৫ মে থেকে দিল্লি সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তরে পড়ে ছিল। দপ্তরের মন্ত্রী আপ নেতা সত্যেন্দ্র জৈনের বিবেচনাধীন ছিল সেটি। এধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে তাঁর দপ্তরেরই।
কেজরিবালের অফিসের জনৈক পদস্থ কর্তা জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের প্রসিকিউশন অর্থাত বিচার সংক্রান্ত শাখা। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র দপ্তর এই মামলায় আইনি বিশেষজ্ঞদেরও পরামর্শ নিয়েছে এবং সব দিক খতিয়ে দেখে, বিচার বিশ্লেষণ করে দপ্তরের বিচার সংক্রান্ত শাখা বিচারে অনুমোদন দিয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও বাইরের হস্তক্ষেপের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই অফিসার বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর বা অন্য কোনও বিভাগ থেকেও আইনি টিমের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নাক গলানো হয়নি।
ফৌজদারি দণ্ডবিধি অনুসারে রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলায় চার্জশিট জমা দিতে গেলে রাজ্য সরকারের সম্মতি, অনুমোদন নিতে হয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে।
২০১৯-র ১৪ জানুয়ারি দিল্লি পুলিশের পেশ করা চার্জশিটে মূল অভিযুক্ত হিসাবে নাম ছিল ১০ জেএনইউ পড়ুয়ার, যাঁদের মধ্যে ছিলেন কানহাইয়া, উমর খালিদ, অনির্বাণ ভট্টাচার্য্য। বাকি সাতজন কাশ্মীরী পড়ুয়া। সরকারি নথিতে প্রকাশ, এই চার্জশিট পেশের মাত্র দুঘন্টা আগে দিল্লি সরকারের কাছে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সম্মতি চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। গত ১৮ সেপ্টেম্বর দিল্লি সরকারকে আদালত জানায়, এক মাসের মধ্যে বিচারের অনুমোদন দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, বিলম্বের ফলে বিচার বিভাগের অমূল্য সময়ের অপচয় হয়েছে।