গুয়াহাটি: বেআইনি অনুপ্রবেশ নিয়ে লাগাতার সরব ছিলেন। এবার আরও বড় ঘোষণা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার। জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (NRC) আবেদনপত্র না থাকলে, আধার কার্ডের জন্য আবেদন জানানো যাবে না বলে জানালেন তিনি। শনিবার এই ঘোষণা করলেন হিমন্ত। নতুন আধার কার্ডের জন্য আবেদন জানানোর ক্ষেত্রে NRC আবেদনপত্রের রিসিট নম্বর জানানো বাধ্যতামূলক বলে জানালেন তিনি। (Assam Aadhaar-NRC Rule)


হিমন্ত জানিয়েছেন, এই সংক্রান্ত Standard Operating Procedure (SOP) তৈরি করা হবে শীঘ্রই। সেই মতো আগামী ১ অক্টোবর থেকে নয়া নিয়ম কার্যকর হবে। হিমন্তর দাবি, NRC-তে নাম নথিভুক্ত রয়েছে বলে দেখাতে হবে সকলকে। এতে বেআইনি ভাবে বিদেশিদের অনুপ্রবেশ বন্ধ হবে রাজ্যে। তাই আধার কার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে এবার রাজ্য আরও কড়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। (Himanta Biswa Sarma)


শনিবার হিমন্ত বলেন, "আধারকার্ডের আবেদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।  এর মাধ্যমে বোঝা যায়, কাদের নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এখন থেকে নতুন আধার কার্ডের জন্য আবেদন জানাবেন যাঁরা, তাঁদের NRC-র রিসিট নম্বর জানাতেই হবে।"


হিমন্তের কথায়, "অসমে এখন থেকে আধার কার্ড পাওয়া আর সহজ হবে না।  আশা করি অন্য রাজ্যগুলিও অসমকে অনুসরণ করবে এ ব্যাপারে।" NRC করার সময় যে ৯ লক্ষ ৫৫ হাজার মানুষের বায়োমেট্রিক রেকর্ড সরকারের কাছে নথিবদ্ধ হয়ে  গিয়েছিল, তাঁদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কার্যকর নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।


অসম সরকারের দাবি, রাজ্যের চার জেলা থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যাক আধার কার্ডের আবেদন জমা পড়েছে, যা সেখানকার মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। এই চার জেলা হল, বরপেটা-১০৩.৭৪ শতাংশ, ধুবরি-১০৩ শতাংশ, মরিগাঁও এবং নগাঁও-১০১ শতাংশ করে। কাকে আধার কার্ড দেওয়া হবে, আর কাকে নয়, তা ঠিক করার ক্ষমতা রাজ্যের হাতেই ন্যস্ত বলে দাবি হিমন্তর। কেন্দ্র রাজ্যকে এই ক্ষমতা দিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। 


হিমন্ত বলেন, "আমরা ঠিক করেছি, অসমে জেলার কমিশনার নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দিলে, তবেই নতুন আধার কার্ড দেওয়া হবে। ওই নো অবজেকশন সার্টিফিকেটও খতিয়ে দেখবে রাজ্য সরকার। আবেদনকারীর কাছে যদি NRC-র আবেদনপত্রের নম্বর থাকে এবং ২০১৪ সালের আগে থেকে যদি রাজ্যের বাসিন্দা হওয়ার নথি থাকে, তবেই তাঁকে আধার কার্ড দেওয়া হবে।"


গত দুই মাসে পড়শি দেশ বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ ভারতে ঢুকে পড়েছেন বলে অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই বিদেশি নাগরিকদের চিহ্নিত করতে সরকার কোনও খামতি রাখবে না বলে জানিয়েছেন হিমন্ত। পাশাপাশি, সীমান্তে নজরদারি বাড়ানোর কথাও জানিয়েছেন তিনি। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের বেআইনি অনুপ্রবেশের খবর সরকারকে জানাতে আহ্বান জানিয়েছেন। একদম গ্রাম থেকে বিদেশি শনাক্তকরণের কাজ শুরু করার ডাক দিয়েছেন হিমন্ত। তাঁর সরকারের দাবি, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত করিমগঞ্জে ৪৮ জন এবং বনগাইগাঁওয়ে চার, হাফলং ও ধুবরিতে একজন করে মোট ৫৪ জন বিদেশি নাগরিকের সন্ধান মিলেছে। তাঁদের মধ্যে ৪৫ জনকে সংশ্লিষ্ট দেশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ন'জন।