রাষ্ট্রপুঞ্জ: ২০০৫-৬ এবং ২০১৫-১৬-র মধ্যে ২৭.৩ কোটি বহুমাত্রিক দারিদ্র কাটিয়ে উঠেছেন। জানাল রাষ্ট্রপুঞ্জ। তারা তাদের রিপোর্টে বলেছে, ভারতের এই দারিদ্রসীমা উত্তীর্ণ হওয়া মানুষের সংখ্যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।


এই তথ্য প্রকাশ করেছে ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম বা ইউএনডিপি ও অক্সফোর্ড পভার্টি অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ বা ওপিএইচআই। তাতে বলা হয়েছে, ৭৫টি দেশের মধ্যে ৬৫টি দেশ ২০০০ সাল থেকে ২০১৯-এর মধ্যে তাদের দারিদ্র উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সক্ষম হয়েছে।

চলুন, দেখে নেওয়া যাক বহুমাত্রিক দারিদ্র কাকে বলে। গরিব মানুষরা প্রতিদিন যে সব সমস্যার সম্মুখীন হন, যেমন স্বাস্থ্য, শিক্ষার অভাব, জীবনযাত্রার অনুন্নত মান, ভাল কাজ না পাওয়া, হিংসার শিকার হওয়ার আশঙ্কা, পরিবেশগতভাবে অনুন্নত বসবাসের পরিবেশ- এই সবই বহুমাত্রিক দারিদ্রের অন্তর্গত। যে ৬৫টি দেশ এই মাল্টিডাইমেনশনাল পভার্টি ইনডেক্স বা এমপিআই কমাতে সক্ষম হয়েছে, তাদের মধ্যে ৫০টি দেশে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষের সংখ্যাও কমেছে। রিপোর্টে বলেছে, দরিদ্রের সংখ্যা সব থেকে বেশি কমেছে ভারতে, গত ১০ বছরে এখানকার অন্তত ২৭.৩ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার ওপরে উঠেছেন।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, আর্মেনিয়া, ভারত, নিকারাগুয়া এবং উত্তর ম্যাসিডোনিয়া গত ৫.৫ থেকে ১০.৫ বছরে তাদের গ্লোবাল এমপিআই অর্ধেক করতে সক্ষম হয়েছে। গোটা দেশেই ভারতে দারিদ্র লক্ষ্যণীয়ভাবে কমেছে বলে জানিয়েছে তারা। ভারত সহ এই দেশগুলি দেখিয়ে দিয়েছে, কীভাবে দারিদ্র কমানো যায়। মূলত ভারতের বিপুল জনসংখ্যার কারণে হিসেবমত এই দেশগুলিতে বিশ্বের এক পঞ্চমাংশ মানুষ থাকেন। শিশুদের মধ্যে দারিদ্র কমার প্রধান কারণ, সরকারের সচেতনভাবে নেওয়া নীতিগত প্রচেষ্টা। যদিও করোনা অতিমারী শুরুর আগে বেরিয়েছে এই পরিসংখ্যান, করোনা শুরুর পর পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে।

ভারতের প্রতিবেশী দুই দেশ নেপাল ও বাংলাদেশেও মানুষের দারিদ্র কিছুটা কমেছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

ওপিএইচআই-এর ডিরেক্টর সাবিনা আলকিরে বলেছেন, করোনা অতিমারী উন্নয়নের ওপর বিরাট আঘাত হেনেছে। কিন্তু করোনা শুরু আগের হিসেব অনুযায়ী এই তথ্য আশার আলো দেখাচ্ছে। মানুষকে দারিদ্রসীমার ওপরে তুলে আনার এই পন্থা আমাদের শেখাতে পারে, ভবিষ্যতে কীভাবে মানুষের জীবনযাত্রা উন্নত করা যায়।

এই তথ্য মূলত সংগ্রহ হয়েছে, পুষ্টি এবং স্কুলে উপস্থিতির হার হিসেব করে। কিন্তু করোনার জেরে গোটা পরিস্থিতি পালটে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাই এই মুহূর্তে সব থেকে বেশি জরুরি, দারিদ্র সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করা, বিশেষত দারিদ্রের সঙ্গে জড়িত যাবতীয় অসহায়তার সমাধান খুঁজতে হবে।