নয়াদিল্লি: বাবরি মসজিদের পরিবর্তে অযোধ্যায় যে নতুন মসজিদ তৈরি হবে, তার ব্লুপ্রিন্ট প্রকাশ করা হবে আগামী শনিবার, তার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে আগামী প্রজাতন্ত্র দিবসে। মসজিদ তৈরির জন্য গঠিত ট্রাস্ট একথা জানিয়েছে। এব্যাপারে ৬ মাস আগে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড গঠিত ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি আতহার হুসেন বলেছেন, ট্রাস্ট ঠিক করেছে, অযোধ্যায় মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে ২০২১ এর ২৬ জানুয়ারি। কেননা সাত দশক আগে আমাদের সংবিধান কার্যকর হয়েছিল এই দিনেই। আমাদের সংবিধান বহুত্ববাদের ওপর স্থাপিত। আমাদের মসজিদ প্রকল্পের মূল নির্যাসও সেটাই।
মসজিদের মূল স্থপতিবিদ প্রফেসর এস এম আখতার প্রজেক্টের প্ল্যান চূড়ান্ত করেছেন। ১৯ ডিসেম্বর সেটাই আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হবে। মসজিদ চত্বরে তৈরি হবে একটি মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতাল, একটি কমিউনিটি কিচেন, একটি লাইব্রেরি। আখতার বলেছেন, মসজিদে একসঙ্গে ২০০০ নমাজির বসার আয়োজন থাকবে, সেটি হবে গোলাকৃতির।
গত বছরের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ স্থলে রামমন্দির নির্মাণের রাস্তা প্রশস্ত করে রায় দেয়, কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়, অযোধ্যারই কোনও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নতুন মসজিদ বানাতে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে বিকল্প ৫ একর জমির বন্দোবস্ত করে দিতে হবে। রাজ্য সরকার অযোধ্যার সোহাভালের ধান্নিপুর গ্রামে ৫ একর জমি বরাদ্দ করে।
আখতার বলেন, নতুন মসজিদ বাবরি মসজিদের থেকে বড় হবে, কিন্তু দেখতে হুবহু তার মতো হবে না। হাসপাতাল থাকবে কমপ্লেক্সের মাঝখানে। ১৪০০ বছর আগে পয়গম্বর তাঁর সর্বশেষ উপদেশে ইসলামের যে প্রকৃত চেতনার কথা বলেছেন, সেই অনুসারে মানবতার সেবা করবে হাসপাতাল। সেটি সাধারণ কংক্রিটের আদলের হবে না, মসজিদের স্থাপত্য়ের সঙ্গে তার সাযুজ্য থাকবে। তাতে ক্যালিগ্রাফি, ইসলামি প্রতীক আঁকা হবে। ৩০০ শয্যার ওই হাসপাতালে অসুস্থ মানুষকে নিখরচায় চিকিত্সা দেওয়ার জন্য সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করবেন ডাক্তাররা। তিনি আরও জানান, মসজিদ তৈরি হবে সৌরশক্তি ও প্রাকৃতিক উপায়ে তাপমাত্রা বহাল রাখার সিস্টেমে। কমিউনিটি কিচেনে দিনে দুবার আশপাশের গরিব লোকের অপুষ্টি মেটাতে খাবার পরিবেশন করা হবে।
আখতার আরও বলেন, আমরা হাসপাতালে মানবসম্পদের জোগান দিতে একটি নার্সিং, প্যারামেডিক কলেজও তৈরি করতে পারি। ফৈজাবাদের স্থানীয় সূত্র থেকেই ডাক্তারদের নিতে পারি। আমরা হাসপাতালের জন্য কর্পোরেট অনুদানের আশা করছি। অনেকেই সাহায্য করতে চান। ৮০জি সম্মতি পেলে আমরা এফআরসিএ-র জন্য আবেদন করে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিমদের কাছে বিদেশি অর্থের আহ্বান জানাব।