অযোধ্যা: দীর্ঘ সাত দশকব্যাপী টানাপোড়েনে ইতি। রাত পোহালেই অযোধ্যায় নবনির্মিত রামমন্দিরের উদ্বোধন। তার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপহার এসে পৌঁছচ্ছে। দেশ-বিদেশ থেকেও বহু মানুষ এযাবৎ মুক্তহস্তে দান করেছেন অযোধ্যার রামমন্দিরে। তার একটি খতিয়ান তুলে ধরেছে যুক্ত বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। তাদের তরফে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, পড়শি দেশ নেপাল এবং আফগানিস্তান থেকেও উপহার এসে পৌঁছেছে। (Ayodhya Ram Mandir Donations)


সংবাদ সংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি অলোককুমার উপহারসামগ্রীর খতিয়ান তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কাশ্মীর থেকে দক্ষিণের তামিলনাড়ু, পড়শি দেশ আফগানিস্তান থেকেও উপহার এসে পৌঁছেছে। অযোধ্যায় রামমন্দিরের যজমান অনিল মিশ্রের হাতে সব উপহার সামগ্রী উঠেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। অলোক জানিয়েছেন, কাশ্মীরের মুসলিম সম্প্রদায়ের তরফে উপত্যকার মাটিতে ফলানো দু'কেজি জাফরান পাঠানো হয়েছে অযোধ্যার মন্দিরে। (Ayodhya Ram Mandir Inauguration)


সংবাদমাধ্যমে অনিল বলেন, "কাশ্মীরের মুসলিম ভাইয়েরা আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। রামমন্দিরের নির্মাণ নিয়ে নিজেদের আনন্দ ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। ভিন্ ধর্মের অনুগামী হলেও, আমাদের পূর্বপুরুষ যে এক, সেকথা জানিয়েছেন। জানিয়েছেন, ভগবান রামই ওঁদের প্রিয় পূর্বপুরুষ। কাশ্মীরের মাটিতে ফলানো দু'কেজি জাফরান দিয়ে গিয়েছেন, রামমন্দিরের যজমান অনিল মিশ্রের হাতে তা তুলে দিয়েছি আমি।"


আরও পড়ুন: AIIMS Reverses Decision: সমালোচনার মুখে পড়ে পিছু হঠল AIIMS, অর্ধদিবস বন্ধ নয়, রামমন্দির উদ্বোধনের দিন চালু থাকবে আউটডোর


রাজস্থানের শ্রী মেহন্দিপুর বালাজি মন্দির ন্যাস থেকে ১ লক্ষ ৫১ হাজার বাক্স লাড্ডু এসে পৌঁছেছে অযোধ্যায়। প্রসাদ হিসেবে সেগুলি ব্যবহার করা হবে। পুণ্যার্থীদের মধ্যে বিতরণের জন্য ৭০০০ কম্বলও এসে পৌঁছেছে সেখান থেকে, এই বিষয়টি খোলসা করেছে রামমন্দিরের নির্মাণের দায়িত্বে থাকা শ্রী রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র সংগঠন। গুজরাত থেকে অযোধ্যার রামমন্দিরে ১০৮ ফুট দীর্ঘ ধূপকাঠি এসে পৌঁছেছে, যার প্রস্থ ৩.৫ ফুট, ওজন ৩ হাজার ৬১০ কেজি। ছ'মাস সময় লেগেছে ওই ধূপকাঠি তৈরি করে। গুজরাতের ভাদোদরার বিহা ভারওয়াড় নামের এক পুণ্যার্থী সেটি পাঠিয়েছেন।


উত্তরপ্রদেশের এটা-র জলেসরে অষ্টধাতুর একটি ঘণ্টা তৈরি করা হয়। ঘণ্টাটির ওজন ২১০০ কেজি। সেটি মন্দিরে উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছে। তামিলনাড়ুর রেশম শিল্পীরা বিছানার চাদর পাঠিয়েছেন, যাতে নবনির্মিত রামমন্দিরের নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। 


দেশেক বাইরে থেকেও প্রচুর উপহার এসে পৌঁছেছে অযোধ্যায়। আফগানিস্তানের কাবুল নদীর জল পাঠানো হয়েছে অযোধ্যার মন্দিরে। ওই নদী কুভা নামেও পরিচিত। ঋগ্বেদে ওই নদীর উল্লেখ পাওয়া যায়। রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতার জন্মস্থান হিসেবে ধরা হয় নেপালের জনকপুরকে। সেখান থেকে প্রায় ৩০০০ উপহার এসে পৌঁছেছে, যার মধ্যে রুপোর জুতো, গহনা, জামা-কাপড় রয়েছে।


এর পাশাপাশি, পুণ্যার্থীরাও মুক্তহস্তে দান করেছেন অযোধ্যার রামমন্দিরে। ৪০০ কেজি ওজনের, পৃথিবীর বৃহত্তম তালা, ১২৬৫ কেজি লাড্ডু এসে পৌঁছেছে। হায়দরাবাদের শ্রীরাম ক্যাটারিং সার্ভিসেস ওই লাড্ডু তৈরি করেছে। সত্যপ্রকাশ শর্মা এবং তাঁর স্ত্রী রুক্মিণী শর্মা তালাটি তৈরি করেছেন। গুজরাতের এক হিরে ব্যবসায়ী ৫০০০ আমেরিকান ডায়মন্ড এবং দু'কেজি রুপো দিয়ে তৈরি নেকলেস উপহার দিয়েছেন, যার উপর রামমন্দির ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।