লখনউ: অযোধ্যার রামমন্দিরের প্রসাদ নিয়ে এবার দুর্নীতির পর্দাফাঁস হল। প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ এই দুর্নীতির শিকার হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। সাইবার জগৎকে কাজে লাগিয়েই বিপুল টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে খবর। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে অযোধ্যা পুলিশ। (Ram Temple Prasad Scam)

Continues below advertisement

প্রাণ প্রতিষ্ঠার শুভ মুহূর্তের সুযোগ নিয়ে, পুণ্যার্থীদের প্রসাদ পাঠানোর নামে প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে জানা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, উত্তরপ্রদেশেরই এক ব্যক্তি, সুদূর আমেরিকা থেকে বসে এই ব্যক্তি গোটা দুর্নীতি চক্র চালাচ্ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। (Ram Mandir Prasad Fraud)

এই ঘটনায় আশিস সিংহ নামের এক ব্যক্তির নাম সামনে এসেছে। তিনি গাজিয়াবাদের ইন্দিরাপুরমের উইন্ডসর পার্কের বাসিন্দা। কিন্তু আমেরিকায় ছিলেন। চলতি বছরের শুরুতে ভারতে পা রাখেন তিনি। আর সেই সময়ই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি গোটা দুর্নীতি চক্রের পর্দাফাঁস করেছে পুলিশ। কিছু টাকা উদ্ধার করা গিয়েছে, এখনও কিছু টাকা মেলেনি।

Continues below advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানের দিকে নজর ছিল গোটা দেশের। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই khadiorganic.com নামের একটি ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করেন আশিস। ওই ওয়েবসাইটে অর্ডার দিলেই 'রামলাল্লা'র প্রসাদ বাড়িতে পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়। 

আশিস নিজেকে সিয়াটলের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হিসেবে তুলে ধরেন। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেশ-বিদেশ থেকে তাঁর কাছে প্রায় ৬.৩ লক্ষ প্রসাদের অর্ডার যায়। প্রসাদের পাশাপাশি, মন্দিরের রেপ্লিকা, কয়েনও বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় ওয়েবসাইটে। প্রসাদা বিনামূল্যে দেওয়া হবে বলে জানালেও, ব্যবস্থাপনার খরচ বাবদ ভারতীয়দের কাছ থেকে মাথাপিছু ৫১ এবং প্রবাসী ভারতীয়দের কাছ থেকে ১১ ডলার করে আদায় করেন।

পুলিশ জানতে পেরেছে. সবমিলিয়ে ১০.৪৯ কোটি টাকা আদায় করেন আশিস। Paytm, Yes Bank, PhonePe, MobiKwik-এর মাধ্যমে টাকা জমা দেন মানুষজন। এর মধ্যে প্রসাদের জন্যই শুধুমাত্র ৩.৮৫ কোটি টাকা জমা পড়ে। বাকি টাকা অন্যান্য সামগ্রীর জন্য। কিছু যে একটা গন্ডগোল হচ্ছে, তা  Shri Ram Janmbhoomi Teerth Kshetra Trust-ই প্রথম বুঝতে পারে। কিছু অনলাইন পোস্ট নজর কাড়ে তাদের। শেষ পর্যন্ত অযোধ্যার সাইবার ক্রাইম ইউনিটের হাতে ওঠে মামলাটি। একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়। 

এর পর, এ বছর ১৩ জানুয়ারি ভারতে পৌঁছন আশিস। বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর ল্যাপটপ, দু’টি আইফোন এবং কিছু টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়। তদন্ত চলাকালীন আশিসের উপর চাপসৃষ্টি করা হয়, তাতে এখনও পর্যন্ত ২.১৫ কোটি টাকা উদ্ধার করে ৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৫২০ প্রতারিতকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকাও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। উত্তরপ্রদেশে এই প্রথম এত বড় সাইবার জালিয়াতি চক্রের সন্ধান মিলল। উত্তরপ্রদেশ সাইবার শাখাকে এর জন্য ১৫০০০ টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।