নয়াদিল্লি: করোনা, লকডাউন। তার জেরে রুজি-রোজগার একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ দিল্লির পশ এলাকা মালব্য নগরের বাবা কা ধাবার। প্রবীণ দুই ব্যক্তি ওই ধাবা চালান। খাবার বিক্রি করে যা আয় হত, তা দিয়ে সংসার চলত। কিন্তু করোনার জেরে বিক্রিবাটা বন্ধ হয়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে নতুন করে জীবন ফিরে পেয়েছে বাবা কা ধাবা। মালভিয়া নগরের এই ধাবা রাতারাতি এতটাই বিখ্যাত হয়ে গিয়েছে, জোম্যাটোতেও তালিকাভুক্ত হয়ে গিয়েছে এই ধাবা। করোনার জেরে অনেকেই এখন বাড়ির বাইরে বেরোতে চান না, ঘরে বসেই খাবার অর্ডার করেন। জ্যোমাটো-র তালিকায় এসে যাওয়ায় বাবা কি ধাবার খাবার এখন ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন। সোশ্যাল মিডিয়া তাগদের দৃষ্টি আকর্ষণ করায় তাদের ধন্যবাদ দিয়েছে জোম্যাটো। জ্যোমাটো তাদের ভেরিফায়েড ট্যুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছে, বাবা কা ধাবা এখন আমাদের তালিকায়। আমাদের টিম ওই প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে রয়েছে। তারা যাতে খাবার সরবরাহ করতে পারেন, সেদিকে দেখছি আমরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় যাঁরা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।

শুধু জ্যোমাটো নয়, টিন্ডার এগিয়ে এসেছে। টিন্ডারের পেজে বাবা কা ধাবা আবার ডেটিং ভেনু।

তবে শুধু বাবা কা ধাবা নয়, দেশজুড়ে এমন অনেক ছোট ব্যবসায়ী লকডাউনে ক্ষতির মুখে। তবে কতজনের খবর আর সামনে আসে। আরও কয়েকটি কাহিনী সামনে এসেছে। তাদের মধ্যে একজন সম্পত সাইদুলু। তিনি এক পোস্টে জানিয়েছেন তিনি দলিত সম্প্রদায়ের। তাঁর ভিটে দখল করার চেষ্টা করছেন তারই বাড়ির সামনে থাকা উচ্চ বর্ণের এক বিধায়ক। তাঁর বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় বিধায়কের নামে এফআইআর পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু বিচার পাননি। সম্পুত জানিয়েছেন বিধায়কের লোকজনেরা তাঁদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন। বাড়ি ঠিক করতে ৫ লক্ষ টাকা লাগবে। কিন্তু সে সামর্থ তাঁদের নেই।

আদর্শ মিশ্র নামে এক ব্যক্তির একটি ইনস্টাগ্রাম পেজ আছে। সেখানে রায়পুর ফুডি লাভ বলে একটি স্টলের গল্প শেয়ার করেছেন তিনি। সেখানে মাত্র ২০ টাকা দিলেই দারুণ ছোলে বাটোরা পাওয়া যায়। কিন্তু লকডাউনের জেরে বিক্রিবাট্টা একদম পড়ে গিয়েছে।

অসমে একটি আনঅফিশিয়াল পেজে আরেক মানুষের কাহিনী নেটিজেনদের চোখে পড়েছে। রন্ধন তাঁর পেশা। আজন্ম একটি হাতের গঠন ঠিক নয়।  কার্যত একটি হাত দিয়ে তিনি রান্না চালিয়ে যান। তাঁর তৈরি করা  পকোড়া, আলুর চপের ভিড় কম হতো না। লকডাউন পাল্টে দিয়েছে ছবিটা।

এমনই আরেকজনের কাহিনী রয়েছে। যারা প্রদীপ বানিয়ে আয় রোজগার করতেই। সামনেই দীপাবলি আসছে। তাঁদের কাছ থেকে মাটির প্রদীপ কিনেও সাহায্য করতে পারেন। তবে শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতে উঠে আসা কাহিনী নয়, আপনার আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা হয়তো এমন ছোট মাপের ব্যবসা করেই দিন গুজরান করতেন। সম্ভব হলে তাদের প্রতি বাড়িয়ে দিতে পারেন সাহায্যের হাত।