দামাস্কাস : আয়া। আরবী শব্দ। মানে ? চমৎকার।


ধ্বংসের ক্ষতের মাঝে নতুন প্রাণ


ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত সিরিয়ার জেনডেরিস শহর। যেদিকেই চোখ ফেরানো হচ্ছে, চারিদিকে শুধু দিগন্তজোড়া ধ্বংসের চিহ্ন। রাস্তা, বাড়ি, ঘর ভেঙে-চুরে একেকার। তুরস্ক ও সিরিয়ার (Turkey- Syria Earthquake) একাধিক শহরের মতোই জেনডেরিস শহরেও বইছে এক ভারী বাতাস। তাপমাত্রার বিচারে বেশ ঠান্ডা ধরালেও প্রিয়জন হারানোর কান্না, ধ্বংসের নিচে চাপা পড়ে থেকে কাছের মানুষদের চলে যাওয়া, যন্ত্রণা-শোক-দুঃখ মেশানো এক ভারী বাতাস। একাধিক ভূমিকম্পে ত্রস্ত গোটা এলাকায় যেখানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রোজ মৃতের সংখ্যা, সেখানে এই জেনডেরিসেই (Jenderis) দেখা মিলেছে আয়া-র। ধ্বংসের প্রবল ক্ষতের মাঝে ফুটফুটে এক নতুন প্রাণ। 


মায়ের নিথর দেহের সঙ্গে যোগ নাড়ির !


ভূমিকম্পে চাপা পড়ে যাওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে খোঁজ মিলেছে ফুটফুটে এক শিশুর। লাশের সারির মাঝে জীবন্ত এক নতুন প্রাণ। আরবী ভাষায় চমৎকার তথা আয়া নিজে ধ্বংসের মাঝে ফিনিক্সের মতোই জন্মেছে। কারণ, যে সময় তাঁকে উদ্ধার করা হয়, তার পাশেই পড়েছিল তার মায়ের নিহর দেহ। মায়ের নিথর দেহের সঙ্গে নাড়ির যোগ তখনও অক্ষত, এমনই এক অবস্থায় উদ্ধার হয়েছে শিশুটি! তাই উদ্ধারের পর তাঁকে 'চমৎকার' তথা আয়া বলছেন সিরিয়ার জেনডেরিস শহরের বাসিন্দারা।


আয়া-র নতুন ঠিকানা


ধ্বংসস্তূপ থেকে আয়াকে উদ্ধারের পর তাঁকে নিয়ে ছোটা হয়েছিল হাসপাতালে। সুশ্রুষার পর তাঁকে আপাতত নিজের বাড়িতেই রেখেছেন আয়ার বাবার কাকা। কারণ, ভূমিকম্প তাঁর পৃথিবীতে আসার আগেই কেড়ে নিয়েছে মাথার ওপরের ছাদ। কেড়ে নিয়েছে সবথেকে বড় আস্তানা। মা ও বাবাকেও। তবে যেভাবে ধ্বংসের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়েছে এক তরতাজা প্রাণ, সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই উৎফুল্ল সকলে। 


সোশাল মাধ্যমে কার্যত ভাইরাল হয়েছে আয়া-কে উদ্ধারের ভিডিও। চারতলা বাড়ির ধ্বংসস্তূপ সরাতে সরাতে কান্নায় নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছিল সে। দ্রুত সেই জায়গা পরিষ্কার করার পরই সকলে দেখতে পান খুদে এক প্রাণকে। যার পরই তাঁকে নিয়ে ছোটা হয় হাসপাতালে। যখন তাঁকে নিয়ে পৌঁছন হয়, তখন অল্প শ্বাসটুকু চলছিল নেতিয়ে পড়া ফুটফুটে মেয়েটার। সদ্য অভিভাবক হারা আয়াকে মাতৃদুগ্ধ পান করান হাসপাতালের এক চিকিৎসেকর স্ত্রী। বাবা-মাকে হারালেও আয়া-র খবর জানতে পেরেই কার্যত সোশাল মাধ্যমে বাবা-মা হারা মেয়েটিকে দত্তক নেওয়ার ইচ্ছা জানিয়ে আবেদন করেছেন অনেক মানুষ। 


আরও পড়ুন- শ্মশানের চেহারা নিয়েছে পথঘাট, লম্বা হচ্ছে মৃত্যু মিছিল, ভূকম্পনে মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ২১ হাজার