শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে বাংলাদেশ আদালত।  এরপর তাঁকে মৃত্যু দণ্ডের সাজা দিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।  শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে বাংলাদেশ আদালত। ১ মাস ধরে সওয়াল-জবাবের পর শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। গত বছর ছাত্র আন্দোলন দমাতে প্রাণঘাতী হামলার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। মূলত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আদালতে শুনানি চলছিল। গত অক্টোবরে সওয়াল জবাব শেষ হয়। আজ, ১৭ নভেম্বর ছিল সাজা ঘোষণারই দিন। এই রায়দান ঘিরে কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত বাংলা দেশ। চলছে প্রবল বিক্ষোভ। অগ্নিসংযোগ, বোমা নিক্ষেপ চলছে । 

Continues below advertisement

কার কী শাস্তি ? 

এদিন নির্দিষ্ট সময় মামলার রায়দান শুরু হয়। রায় পড়ে শোনাচ্ছিলেন বিচারপতি। রায়ে ট্রাইব্যুনাল বলে, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একটি অভিযোগে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। শেখ হাসিনার আমলের আইজি চৌধুরী আবদুল্লা আল মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা ও প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কমলের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের প্রাক্তন পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে মৃত্যুদণ্ড থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর আল-মামুন রাজসাক্ষী হন। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তিনি রাজ সাক্ষী দেন।  বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার জানিয়েছে, ২০১০ সালে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মামুনই প্রথম অভিযুক্ত যিনি রাজ সাক্ষী হন।

Continues below advertisement

বিচারপতি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে অগাস্টের মধ্যে সংঘটিত বিক্ষোভের সময় পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপ হয়ে পড়ে। হিংসার বলি হয়  প্রায় ১,৪০০ জন ।  ২,৪০০ জনেরও বেশি আহত হয়। বিচারপতি তাঁর রায়দানে বলেন,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকার অস্ত্র ব্যবহার করে। বিক্ষোভকারীদের থামাতে হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানো হয়, যার ফলে দেশের অনেক জায়গায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে এবং পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। এর পর শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন।

সোমবার বিচারপতি মোহম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাজা সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। বিচারকরা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়কে ছয়টি ভাগে বিভক্ত করে পাঠ করেন।  যে পাঁচটি অভিযোগ ছিল হাসিনার বিরুদ্ধে, সেগুলি হল -  প্রথম : বিক্ষোভ চলাকালীন আন্দোলনকারীদের হত্যার অভিযোগদ্বিতীয় : হেলিকপ্টার ও ড্রোন ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগতৃতীয় : আন্দোলনকারী ছাত্রদের খুনের অভিযোগচতুর্থ : হিংসায় প্ররোচনামূলক বয়ান দেওয়ার অভিযোগপঞ্চম : মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত করার অভিযোগ