ঢাকা : দুই মাস পার, বিনা বিচারে এখনও বাংলাদেশের জেলে ! সন্ন্য়াসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন-মামলার শুনানি এগিয়ে আনার আবেদন ফের খারিজ করে দিল হাইকোর্ট। ফলে, ইউনূসের বাংলাদেশে, সেই বিনা বিচারে, জেলবন্দিই থাকতে হচ্ছে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে। এই পরিস্থিতিতে এবিপি আনন্দে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিলেন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের মা সন্ধ্যারানি ধর। ঢাকা হাইকোর্টে এখনও ১৬৫ নম্বরের শুনানি, ২৪৯ নম্বরে রয়েছেন সন্ন্যাসী। ফের দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ হয়ে গেছে। আর কতদিন বিনা বিচারে জেলে থাকবেন সন্ন্যাসী ? কবে ঢাকা হাইকোর্টে সন্ন্যাসীর জামিনের আবেদনের শুনানি হবে ? দেশদ্রোহিতার অভিযোগে জেলবন্দি সন্ন্যাসীর জন্য এখন শুধুই অপেক্ষা ! অপেক্ষার প্রহর গুণছে পরিবারও। এই পরিস্থিতিতে সন্তানকে নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণের মা।
সন্ধ্যারানি ধর বলেন, "শুনানি হবে হবে অনেকবার বলেছে। কিন্তু, হচ্ছে না। কোনওদিন খারাপ পথে যায়নি। তা না যাওয়ার পরেও যখন এরকম হয়েছে, তখন চিন্তা...। একবার একবার করে তিনবার শুনানি হবে বলছে। ধর্মের জন্য জীবনটা দিচ্ছে। বাবাকে একদিনের জন্যও দেখেনি (চিন্ময়কৃষ্ণ দাস)। এ ছেলেকে নিয়ে আমি জীবনটা কাটাচ্ছি। ফোনে এক-দু'বার যোগাযোগ হয়েছে। আমার জন্য সবসময় চিন্তায় আছে। ও ভাবছে, ও আসার আগে আমি মরে যাব। আমি বলেছি, তোমার বাবা যখন মারা গেছে, আমি মরিনি, আর এখন মরব না। চিন্তা করবে না।"
তিনি আরও বলেন, "এরকম হয়ে যাচ্ছে। আর কী করে লড়াই করবে ? বাংলাদেশে তো আইন নেই। আইন থাকলে, লড়াই করলে নয় হত। কিন্তু, এখানে তো আইন নেই। এই মুহূর্তে চাইছি ও যেন বের হয়। নাহলে আমার মনে হয়, ওর জীবন নিয়ে টানোপোড়েন হবে। যে ছেলে একদিনের জন্যও বাড়িতে থাকে না। সবসময় মন্দির নিয়ে থাকত। আজ ২ মাসের মতো কারাগারে বন্দি। জীবন নিয়ে...। ওর যদি ওষুধ না থাকত, আমি মনে দুঃখ করতাম না। সবকিছু খেতে পারত, শুতে পারত...। ভারতের ওষুধও বাংলাদেশে ঢুকছে না। ভগবানের ওপর যা কিছু। আর কিছু তো বলার নেই। সবাই তো চিন্তা করছেন। চিন্তা করলে কী হবে ? ওর শরীর বিনাশ হয়ে যাচ্ছে। ওর বাবা স্ট্রোক হয়ে হঠাৎ ভালো মানুষ চলে গেছেন। ওর জন্মের আগের দিন। স্কুলের হেডমাস্টার ছিলেন। আমিই তো হাসপাতালে ছিলাম। তিনদিন পর আসছি। ওকে তো দেখছি না। তার থেকে আর কিছু দুঃখের আছে পৃথিবীতে।"