ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা : কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে খুন বাংলাদেশের সাংসদ( Bangladesh MP Murder ) । ১২ মে ভারতে আসেন বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার-উল-আজিম। ৯ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার-উল-আজিম। বাংলাদেশ পুলিশ ইতিমধ্যেই ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে করেছে বলে খবর। খুনের কথা স্বীকার করেছেন ধৃতরা, খবর বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রের। বাংলাদেশের পুলিশ ও ভারতের পুলিশ সমন্বয় করেই এই ঘটনার তদন্ত করেছে।
কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসে ৯ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পুলিশ তাঁর খোঁজখবর চালাচ্ছিলই, ৯ পর অবশেষে বাংলাদেশের সাংসদ খুন হয়েছেন, বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার-উল-আজিমের গাড়ি আগেই উদ্ধার করেছিল নিউটাউন থানার পুলিশ। বেশ কয়েকদিন ধরেই ঘটনার তদন্ত চালানো হচ্ছিল । ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মোট ৩ সন্দেহভাজনকে আগেই আটক করা হয়েছিল। তাঁদের বয়ানের সূত্র ধরেই বাংলাদেশের সাংসদের রহস্যজনক অন্তর্ধান-তদন্তে বুধবার নিউটাউনের একটি আবাসনে তল্লাশি চালায় বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ।
দেহ টুকরো করে লোপাট ?
সূত্রের খবর, আবাসনের CC ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়েছে, যে ৩ জন ব্যক্তি সাংসদের সঙ্গে ছিলেন, পরে তাঁরা বেরিয়ে গেলেও সাংসদকে বার হতে দেখা যায়নি। পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের মেঝে , বেসিনে চাপ-চাপ রক্তের দাগ পায়। তার থেকেই তাঁদের সন্দেহ হয় খুনের পর ওই সাংসদের দেহ টুকরো করে কোথাও লোকানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না, তাঁর দেহ কোথায় ! তবে পুলিশের ধারণা, ওই আবাসনের মধ্যেই কোথাও লোকানো আছে দেহ বা দেহাংশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ১২ মে ভারতে আসেন বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার-উল-আজিম। দুই ব্যক্তিকে নিয়ে বরানগরে এক পরিচিতর বাড়িতে যান। পরিচিতর দাবি, প্রথমে চিকিৎসককে দেখাতে যাচ্ছেন বললেও, পরে সাংসদ জানান দিল্লিতে তাঁর জরুরি বৈঠক রয়েছে। তারপর থেকেই বাংলাদেশের সাংসদের খোঁজ মিলছে না বলে অভিযোগ।
বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কী বললেন
বুধবার সকালে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি বলেন, এমপি আনারের দেহ এখনও পাওয়া যায়নি। তবে তাকে যে খুন করা হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। তিনি যদিও বলেন, তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছুই এখন বলা যাবে না। মরদেহ এখনও হাতে আসেনি। যতটুকু খবর পাচ্ছি, সে অনুযায়ী তদন্ত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন,আজিম ঝিনাইদহ সীমান্তবর্তী এলাকার সাংসদ ছিলেন। ওই এলাকাটি একটি সন্ত্রাসকবলিত এলাকা। তিনি এবারও ওই এলাকার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য কলকাতা যাওয়ার পর ওই ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশের পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে। শিগগিরই এই খুনের মোটিভ জানা যাবে বলে আশা রাখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন ভারতের পুলিশ সব ধরনের সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাংসদ খুন হওয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী ভারতের পুলিশের সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ পুলিশ।
কী জানালেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার ?
শাবান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এই ঘটনায় খুবই উদ্বিগ্ন। ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত প্রতিবেশী এবং কলকাতা বাংলাদেশের মানুষের কাছে অতি পরিচিত। পর্যটন, ব্যবসা, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদির জন্য মানুষ কলকাতায় আসে। এমন পরিস্থিতিতে একজন শাসক দলের সাংসদ নিখোঁজ হওয়া দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। তিনি আরও বলেন, যদি তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকে তাহলে কেন হত্যা করা হল, কারা জড়িত তা তদন্ত করতে হবে। পুরোটাই নির্ভর করছে কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর। যদি ব্যক্তিগত কারণে তাঁকে হত্যা করা হয়, তাহলে তা ২ টি দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপর কোনও প্রভাব ফেলবে না। দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত বন্ধুত্বপূর্ণ এবং পরীক্ষিত সম্পর্ক।
আনোয়ার-উল-আজিম কে?
একাধিকবার বাংলাদেশের সাংসদ হয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের সদস্য।
আরও পড়ুন :
কলকাতায় এসে ৯ দিন ধরে নিখোঁজ বাংলাদেশের সাংসদ আনোয়ার-উল-আজিম, দানা বাঁধছে রহস্য