ঢাকা: রক্তক্ষয়ী আন্দোলনপর্বে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ভাঙার দৃশ্য ধরা পড়েছিল। সেই সময়ই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। শেখ মুজিবুর রহমানের সব স্মৃতি মুছে ফেলা হতে পারে বলে উদ্বেগে ছিলেন তাঁরা। একে একে সেই আশঙ্কাই সত্যি হতে চলেছে। কারণ ঢাকায় বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে সরিয়ে দেওয়া হল মুজিবের ছবি। সচিবালয়ে তিন উপদেষ্টার দফতর থেকেও তাঁর ছবি সরানো হয়েছে। (Sheikh Mujibur Rahman)


বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম মুজিবের ছবি সরানোর কথা জানান। আমেরিকা সফরে গিয়ে সম্প্রতি এই মাহফুজকেই শেখ হাসিনার সরকারতকে উৎখাত করতে মাথাচাড়া দেওয়া আন্দোলনের 'মূলচক্রী' হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। (Bangladesh News)


মুজিবের ছবি সরানো নিয়ে দেশের অন্দরে গোড়াতে সমালোচনার মুখে পড়ে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। BNP নেতা রুহুর কবির রিজভি জানান, মুজিবের ছবি সরানো উচিত হয়নি। পরে যদিও ওই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন রিজভি। জানান, হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনে মুজিবের ছবি রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়। বর্তমানে সেই ফ্যাসিবাদী আইন কার্যকর থাকতে পারে না। দুঃশাসনের কোনও চিহ্ন রাখা উচিত নয়। 


[


মুজিবের ছবি সরানোয় ইউনূস কী করে সায় দিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই মুজিবের স্মৃতিতে পর পর কোপ পড়তে শুরু করে। মুজিবের জন্ম এবং মৃত্যু বার্ষিকীর ছুটি ক্ষমতায় এসেই বাতিল করে বর্তমান সরকার। মুদ্রা থেকে মুজিবের ছবি সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আগামী বছর থেকে পাঠ্যক্রমে ভাষা আন্দোলন নিয়ে মুজিবের লেখা 'বায়ান্নর দিনগুলো' আর থাকছে না। আগেই কেন এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি, সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মাহফুজ। দরবার হল থেকে নিজের একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। যে জায়গায় দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন তিনি, আগে সেখানে মুজিবের একটি ছবি ঝোলানো ছিল। কিন্তু মাহফুজের ছবিতে সেই ছবি দেখা যায়নি।



মুজিবের ছবি সরানো নিয়ে ফেসবুকে মাহফুজ লেখেন, 'শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি '৭১ পরবর্তী ফ্যাসিবাদী, তাঁর ছবি দরবার হল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। লজ্জার বিষয় যে ৫ অগাস্টের পরই ওঁর ছবি সরাতে পারিনি। ক্ষমা চাইছি। কিন্তু যতদিন আন্দোলনের চেতনা বেঁচে থাকবে মানুষের মনে, আর কোথাও দেখা যাবে না ওঁকে'।