ঢাকা : আবারও একবার নতুন করে অশান্তি বাংলাদেশে। হিংসার আগুনে জ্বলছে চারিদিক। প্রথম হাসিনা-বিরোধী ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু। তাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে অগ্নিসংযোগ-তাণ্ডব। দুই সংবাদমাধ্যম অফিসে ঢুকে লুঠপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়। আটকে পড়া অসহায় কর্মীদের ক্রেনে করে নামায় দমকল। খুলনায় খুন করা হয়েছে সাংবাদিককে। অন্যদিকে, শ্যুটআউটে জখম হয়েছেন চিকিৎসক। তছনছ করা হয়েছে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছায়ানট। এক অর্থে, চারপ্রান্ত জ্বলছে। এই পরিস্থিতিতে মৌলবাদী জনতার তৈরি এই বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসলীলার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিলেন বাংলদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূসের মূল সহযোগী ও মিডিয়া উপদেষ্টা শফিকুল আলম। তিনি মন্তব্য করেন, "আমি যদি মাটিতে বিরাট গর্তে খুঁড়ে লজ্জায় নিজেকে কবর দিতে পারতাম।"

Continues below advertisement

ধর্মীয় গোঁড়ামি নিয়ে চলা শ্রেণির বিরুদ্ধে বরাবর নরমপন্থা অবস্থান নিয়ে চলেছে ইউনূস সরকার। এমন অভিযোগ বারবার উঠেছে। যা ছাত্র-শিবিরের মতো গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত অগ্নিসংযোগকারী এবং অশান্তিকারীদের উৎসাহিত করেছে। বাংলাদেশের সামগ্রিক অশান্তি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন শফিকুল আলম। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, "গত রাতে, 'দ্য ডেইলি স্টার' এবং 'প্রথম আলো'য় আমার সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে সাহায্যের জন্য উন্মত্ত, কান্নাজড়িত ফোন পেয়েছি। আমার বন্ধুরা, আমি গভীরভাবে দুঃখিত যে আমি আপনাদের ব্যর্থ করেছি। সঠিক মানুষদের আমি প্রচুর কল করেছি যাতে সাহায্য পাঠানো যায়, কিন্তু তা সময়ে পৌঁছায়নি। শেষমেশ আমি ভোর ৫টায় ঘুমাতে যাই এই নিশ্চয়তা নিয়ে যে, দ্য ডেইলি স্টারে আটকে থাকা সব সাংবাদিককে উদ্ধার করা গেছে এবং তাঁরা নিরাপদে আছেন। তবে, ততক্ষণে, দু'টি সংবাদপত্র ইতিমধ্যেই দেশের সবচেয়ে ভয়াবহ জনতা-আক্রমণ এবং সংবাদমাধ্যমে অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রত্যক্ষ করে ফেলেছে এবং তা সহ্য করেছে।" 

Continues below advertisement

গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির মৃত্যু ঘিরে উত্তাল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমের অফিসে হামলা চলে। গভীর রাতে বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়. ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর চালানো হয়েছে আরও এক সংবাদপত্রের অফিসেও। প্রায় চার ঘণ্টা তাণ্ডব চলার পর কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিককে উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২ টা নাগাদ, সংবাদপত্রের অফিসের ব্যাপক ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় অফিসের একতলায়। দ্রুত সেই আগুন ছড়ায় ওপরের দিকে। বিল্ডিংয়ের সামনে কাতারে কাতারে ভিড়ের জেরে বেশ কিছুটা দেরিতে আসে দমকল বাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে অফিসের ছাদে আশ্রয় নেন সাংবাদিকদের একাংশ। হামলার শিকার হন সংবাদপত্রের এক শীর্ষকর্তাও। অবশেষে রাত ২টো নাগাদ আসে দমকল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় সেনাবাহিনী। এই অশান্তির আবহে, দেশবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্টায় সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার।