কলকাতা : কোটা বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান হাদির খুনের ঘটনায় ফের একবার অস্থির বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন । তার আগে ফের অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। ফের সক্রিয় কট্টরপন্থী আন্দোলনকারীরা। আবারও একবার সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে ভারতবিরোধী আন্দোলন। সব রাগ যেন গিয়ে পড়েছে ভারতের উপরেই। বাংলাদেশে টার্গেট হয়েছে ভারতীয় কূটনীতিকের বাসভবনও। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ , খুলনা ও রাজশাহীতে ভারতের ভিসা আবেদন কেন্দ্র বন্ধই রাখল ভারত।
নিরাপত্তার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন ঢাকায় কর্মরত ভারতীয় হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা। যদিও, বৃহস্পতিবারই খুলে দেওয়া হয় ঢাকার ভিসা আবেদন কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ, ভারতীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট হাই কমিশনের উদ্দেশে রাজশাহীতে মিছিলে নামে 'ভারত-বিদ্বেষী' সংগঠন 'জুলাই ৩৬ মঞ্চ'। রাজশাহীর ভদ্রা মোড় থেকে মিছিল শুরু হলে, কিছুদূর এগোতে না এগোতেই পুলিশের বাধার মুখে পড়ে মিছিল। প্রায় ১০০ মিটার পথ আগেই মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। সেখানেই অবস্থানে বসে পড়ে বিক্ষোভকারীরা। খুলনাতেও একই ভাবে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ।
গত বুধবারই ঢাকার গুলশনে ভারতীয় হাই কমিশনের উদ্দেশে মিছিল করে বিক্ষোভকারীরা। এই বিক্ষোভের ঠিক আগে ভারতীয় কূটনীতিবিদদের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়া হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহকে দিল্লিতে তলব করে ভারত। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ঘিরে নিরাপত্তাহীনতা ও চরমপন্থীদের কর্মকাণ্ড নিয়ে ভারতের উদ্বেগের কথা তাঁকে জানানো হয়। এর পাশাপাশি একটি বিবৃতিতে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক জানায়, 'বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কিছু ঘটনাকে ঘিরে চরমপন্থীদের ভুয়ো দাবি প্রত্যাখান করে ভারত। এটা খুবই দুঃখের বিষয় যে এ নিয়ে এখনও কোনও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এমনকী ভারতের সঙ্গে এই সংক্রান্ত কোনও তথ্যপ্রমাণও ভাগ করে নেয়নি বাংলাদেশ।' বাংলাদেশের কোটা বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর খবর আসতেই দেশ জুড়ে ক্ষোভ আছড়ে পড়ে। 'ইনকিলাব মঞ্চের' ফেসবুক পেজে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, 'ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী সংগ্রামে' 'শহিদ' হয়েছেন ওসমান বিন হাদি। 'ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী সংগ্রামে'-এর কথা বলেই উস্কে দেওয়া হয়, ভারতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ। আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে নির্বাচন। তার আগে এমন ঘটনায় রীতিমতো উত্তপ্ত ইউনুসের দেশ । রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনের আগে অশান্তির বাতাবরণ টিকিয়ে রাখতেই এই পরিস্থিতি বাংলাদেশে।