কলকাতা : বাংলাদেশে এখনও হিংসার আগুন জ্বলছে ! চলছে অবাধ লুঠতরাজ, একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমও।  ওপারে চলা এই নৈরাজ্যের শিকার সেদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরা। এমনই নানা ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে, আক্রান্ত মন্দির! লুঠপাট করা হচ্ছে । মন্দিরও নাকি ভেঙেও দেওয়া হয়েছে। এই আবহে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের সুরক্ষার আবেদন জানালেন জগৎগুরু রামভদ্রাচার্য ও তাঁর উত্তরসূরি আচার্য রামচন্দ্র দাস। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির কাছে হিন্দুদের সাহায্যের আবেদন জানালেন তাঁরা।


জগৎগুরু রামভদ্রাচার্যের বার্তা, "কাল বাংলাদেশে যা ঘটেছে, তা খুবই দুঃখজনক। গণতন্ত্র শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। সবথেকে দুঃখের বিষয়, যে দেশে অল্প-সংখ্যক হিন্দু রয়েছে, তাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। যে নৃশংসতার সঙ্গে বাংলাদেশে অত্যাচার করা হচ্ছে, তা সহ্য করা যায় না। হিন্দুদের ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নিরীহ মেয়েদের সম্মান নিয়ে খেলা করা হচ্ছে। তাঁদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে আমি খুবই দুঃখিত। ভারত সরকারকে বলব, হিন্দুদের নিয়ে ভাবতে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলব, বাংলাদেশের এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করুন। বাংলাদেশিদের ভুললে চলবে না যে, ভারতের সহায়তাতেই বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে। হিন্দুদের উদ্দেশে বলব, ভেদাভেদ ভুলে হিন্দুত্ব প্রতিষ্ঠা করুন। হিন্দুদের আত্মসম্মান রক্ষা করা হোক।"


অন্যদিকে বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে জগৎগুরু রামভদ্রাচার্যের উত্তরসূরি আচার্য রামচন্দ্র দাসের বক্তব্য, "আজ মন খুব ব্যথিত আছে। কাল বাংলাদেশ থেকে যেধরনের ঘটনাক্রম সামনে আসছে, যে রকমের তাণ্ডব ওখানকার নাগরিকরা চালিয়েছেন, সেখানকার প্রধানমন্ত্রীকে দেশ ছেড়ে ভারতে এসে আশ্রয় নিতে হয়েছে। এর সঙ্গে সেখানে থাকা অল্প সংখ্যক হিন্দুদের ওপর যেরকম তাণ্ডব চালানো হচ্ছে। ছোট ছোট শিশুদের সঙ্গে নোংরামো করা হচ্ছে। ঘর লুঠ করা হচ্ছে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে মন্দির বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় রোজ এক লক্ষ করে লোককে খাইয়ে ছিল, সেই ইস্কন মন্দিরে হিংসা প্রদর্শনকারীরা আগুন লাগিয়ে নষ্ট করে দেওয়ার চেষ্টা করে। গোটা বিশ্বের কাছে এটা চিন্তার বিষয়। পুরো বিশ্বে হিন্দু রয়েছে। কিন্তু, সবথেকে বড় কেন্দ্র ভারত। তাই ভারত সরকারের কাছে আবেদন, বাংলাদেশে থাকা সেই হিন্দুদের নিয়ে চিন্তা করুন। ওদের সুরক্ষা ও সম্মান দিয়ে থাকার ব্যবস্থা করুন। সেখানকার বর্তমান প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে এই আশ্বাস নেওয়া হোক, যেন সেখানে বসবাসরত হিন্দুদের কোনও কষ্ট হবে না। তাঁদের প্রতি কোনও অত্যাচার হবে না। যদি ওরা তা না মানে তাহলে ভারত সরকার যেন কঠোর পদক্ষেপ নেয়। হিন্দুদের সম্মান-অধিকার নিয়ে খেলার কারো অধিকার নেই। ভারতবাসীকে বলব, এটা সংকটের সময়। ওই হিন্দু ভাইদের কথা ভাবুন। বাংলাদেশে থাকা অল্প সংখ্যক হিন্দুদের পাশে থাকুন। ভারত সরকারের কাছে আবেদন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিন। প্রধানমন্ত্রী ওখানকার প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে ওঁদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করুক।"