নয়াদিল্লি: দিল্লির সীমানায় সিঙ্ঘুতে কৃষকদের অবস্থানস্থল ঘিরে ব্যারিকেড তৈরি করেছে দিল্লি পুলিশ। রাস্তায় পোঁতা হয়েছে বড় বড় পেরেক। এই সাজো সাজো রব দেখে ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রীর দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। কেন্দ্রের এই তৎপরতা দেখে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীও।
প্রিয়ঙ্কা গাঁধী ট্যুইটে সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “প্রধানমন্ত্রীজি, কৃষকদের বিরুদ্ধে কি যুদ্ধ ঘোষণা করলেন?” রাহুল ট্যুইটে লিখেছেন, “সেতু তৈরি করুন। দেওয়াল নয়!”
https://twitter.com/RahulGandhi/status/1356455739510820865
রাস্তায় পোঁতা পেরেক। উঁচু কংক্রিটের বাধা। আছে বোল্ডার-ব্যারিকেডও। দিল্লিমুখী রাস্তা বন্ধ। সিঙ্ঘু-টিকরী-গাজিপুর সীমানা যেন দুর্গ। ট্র্যাক্টর র্যালির পর এবার দেশজুড়ে ৩ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধের ডাক দিল আন্দোলনকারী কৃষকদের সংগঠন। আগামী শনিবার বেলা ১২টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত দেশের সব জাতীয় ও রাজ্য সড়কে চাক্কা জ্যামের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। সংগঠনের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন ভারতীয় কিষাণ মোর্চার সভাপতি বলবীর সিং রাজেওয়াল।
দিল্লিতে কৃষকদের আন্দোলন ঘিরে কড়া পদক্ষেপ নিল কেন্দ্রীয় সরকার। আগেই বিদ্যুত্, জল ও ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে সিঙ্ঘুতে। এবার কৃষকদের গতিবিধি রুখতে ব্যারিকেডের সংলগ্ন রাস্তায় পেরেক ছড়িয়ে দিল পুলিশ। কার্যত দুই দেশের সীমান্তের চেহারা নিয়েছে রাজধানী।
রাস্তায় রাস্তায় দাঁড় করানো বড় গাড়ি, বোল্ডার, ব্যারিকেড, কাঁটাতার। এই আয়োজন সিঙ্ঘু, টিকরি গাজিপুরে কৃষকদের অবস্থানের চারপাশের রাস্তায়। কিন্তু কেন এই আয়োজন? সরকারের উদ্দেশ্য, কোনওভাবেই যাতে অবস্থানস্থল থেকে কৃষকরা মিছিল করতে না পারেন। শুধু তাই নয়, কৃষকদের গতিবিধি আটকাতে রাস্তায় পেরেকও ছড়িয়ে রাখা হয়েছে।
কেন্দ্রের কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকদের আন্দোলন মঙ্গলবার ৬৯ দিনে পড়ল। গাজিপুরে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে কয়েকটি স্তরে। কার্যত দুর্গের চেহারা নিয়েছে গাজিপুর। এবার কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে, পেরেক ছড়িয়ে কৃষকদেরই অবস্থানস্থলে আটকে রাখার জন্য তত্পর প্রশাসন।
হাজার হাজার কৃষক প্রজাতন্ত্র দিবসের র্যালিতে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। অভিযোগ র্যালির রুট পরিবর্তন করে কৃষকরা। অভিযোগ অনুমতি ছাড়াই লালকেল্লার ভেতর ঢুকে পড়ে তাঁরা। লালকেল্লা কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ৮৪ জনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর মাসে সংসদে পাশ হয় ৩ কৃষি আইন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রের সঙ্গে ১১ দফায় বৈঠক হয়েছে কৃষকদের। তাতে মেলেনি কোনও সমাধান সূত্র। কেন্দ্রের সঙ্গে শর্তসাপেক্ষে বৈঠকে রাজি বলে জানিয়েছেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত।