নয়াদিল্লি: গালওয়ান উপত্যকায় সীমান্ত সংঘাতের ইস্যুতে ভারত-চিন উত্তেজনার বরফ গলাতে আসরে নেমেছিলেন অজিত ডোভাল। গালওয়ানের সংঘাতের ক্ষেত্র ও পাঙ্গং শো -এর নিকটবর্তী এলাকা থেকে চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) জওয়ানরা পিছু হটে সরে যাওয়ার আগে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ডোভাল চিনা বিদেশমন্ত্রী ও স্টেট কাউন্সিলর ওয়াং ই-র সঙ্গে রবিবার ভিডিও কলে কথা বলেছিলেন বলে ওয়াকিবহাল মহল জানিয়েছে। দুজনের আলোচনায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (পিএলএ) পুরোপুরি ও বহাল থাকার মতো শান্তি, স্থিতাবস্থা ফেরানোর বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাছাড়া, গালওয়ানের সংঘর্ষের মতো ঘটনা আগামীদিনে এড়াতে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারেও দুপক্ষের কথা হয় বলে জানিয়েছেন এক শীর্ষ সরকারি কর্তা।
পরে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ডোভাল ওয়াং, সীমান্ত ইস্যু সংক্রান্ত দুই বিশেষ প্রতিনিধি ভারত-চিন সীমান্ত এলাকার পশ্চিম সেক্টরের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন, গভীর মতামত বিনিময়ও করেছেন। তাঁরা একমত হয়েছেন যে, শান্তি ও স্থিতাবস্থা পুরোপুরি ফেরাতে হলে ভারত-চিন সীমান্ত অঞ্চলে উত্তেজনা হ্রাস ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সেনাবাহিনীর যত দ্রুত সম্ভব পুরোপুরি তুলে নেওয়া সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে তাঁরা আরও সহমত হয়েছেন যে, এলএসি বরাবর দ্রুততার সঙ্গে সেনাবাহিনী সরানোর চলতি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে।
দ্রুত ডোভালের চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বরফ গলানো বৈঠকের ফল দেখা যায়। সরকারি অফিসাররা জানিয়েছেন, গত ১৫ জুন যে গালওয়ানে দুদেশের সেনা জওয়ানদের সংঘর্ষ হয়েছিল, সেই স্থান থেকে প্রায় ১ কিমি পিছনে সরে যায় চিনা বাহিনী। সেদিনের সংঘর্ষে এক কর্নেল সহ ২০ জন ভারতীয় জওয়ান প্রাণ হারান। তার প্রতিক্রিয়ায় ভারত-চিন সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়, যার জেরে শেষ পর্যন্ত এ দেশে টিকটক সমেত ৫৯টি চিনা মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ করে সরকার। নানা সেক্টরে চিনের সঙ্গে যোগ থাকা বাণিজ্য সংস্থাগুলির আগামীদিনে অংশগ্রহণের দরজাও বন্ধ করা হয়।
সূত্রের খবর, ডোভাল ও ওয়াং একমত হন, দুপক্ষই পরস্পরের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের এই ঐকমত্য থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাবে যে, ভারত-চিন সীমান্তে শান্তি ও স্থিতাবস্থা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও উন্নতির স্বার্থেই জরুরি এবং মতপার্থক্যকে বিতর্কে পরিণত হতে দেওয়া চলবে না। ভারত-চিন সীমান্তে ধাপে ধাপে ক্রমানুসারে উত্তেজনা প্রশমনও সুনিশ্চিত করা উচিত দুদেশের। তাঁরা জোর দিয়ে বলেছেন, দুপক্ষ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখাকে সম্মান করবে, মেনে চলবে, স্থিতাবস্থা বদলাতে কোনও একতরফা পদক্ষেপ করবে না, সীমান্তে শান্তি, শৃঙ্খলা, স্থিতাবস্থা নষ্ট হতে পারে এমন যে কোনও ঘটনাই এড়াতে একযোগে কাজ করবে।