কলকাতা: বাংলায় উমপুনের তাণ্ডব। তছনছ কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনা। লন্ডভণ্ড পূর্ব মেদিনীপুরও। করোনার থেকেও বড় বিপর্যয়, প্রায় ১০ থেকে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রিজেন্ট পার্কে গাছ চাপা পড়ে মৃত হয়েছে মা ও ছেলের। মাথায় চাঙড় পড়ে হাওড়ায় মৃত কিশোরী। বসিরহাট, মিনাখাঁয় গাছ পড়ে ২ জনের মৃত্যু নবান্ন থেকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
উমপুন-বিপর্যয় করোনার থেকেও ভয়াবহ, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, 'উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সব ধ্বংস হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ নেই, জল নেই, পুকুর, চাষের জমি সব শেষ। রামনগর, নন্দীগ্রামে প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেছে।'
উমপুন-বিপর্যয় করোনার থেকেও ভয়াবহ, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, 'উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সব ধ্বংস হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ নেই, জল নেই, পুকুর, চাষের জমি সব শেষ। রামনগর, নন্দীগ্রামে প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেছে।'
উমপুন নিয়ে আতঙ্ক ছিলই। ঝড় বয়ে যাওয়ার পর দেখা গেল, চারপাশে শুধুই ধ্বংসের ছবি। মাস ছয়েক আগে তাণ্ডব চালিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। আর এবার উমপুন। কলকাতা থেকে জেলা, শুধুই ধ্বংসের চিত্র।
উমপুনে কার্যত লণ্ডভণ্ড দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে টিনের চাল উড়ে যায়। কুলপিতে বাঁধ উপচে গ্রামে ঢুকেছে জল।
হাওড়াতেও তাণ্ডব চালিয়েছে উমপুন। হাওড়ার ব্যাঁটরায় খড়-কুটোর মতো উড়ে যায় স্কুলের টিনের চাল।
উত্তর ২৪ পরগনায় কামারহাটিতে ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি! উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গায় নদীবাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।গুমায় উপড়ে পড়ে অসংখ্য গাছ। অবরুদ্ধ হয়ে যায় যশোর রোড। সাইক্লোনের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জ। তাসের ঘরের মতো পড়ে ভাঙল ঘর-বাড়ি। খেলনার মতো উপড়ে গেল বিশাল বিশাল গাছ। উপকূলবর্তী এলাকা হওয়ায় হিঙ্গলগঞ্জে এই ঝড় মারাত্মক চেহারা নেয়। উথাল পাথাল করতে থাকে ইচ্ছামতী নদী।
হুগলির শ্রীরামপুরেও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে। বাড়ির উপর ভেঙে পড়ে গাছ।
উমপুনে তছনছ সৈকত শহর দিঘা। ঝড়ে ভেঙে পড়ে অসংখ্য গাছ। অবরুদ্ধ দিঘা হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তাও। তাজপুর, শঙ্করপুর, মন্দারমণিতেও প্রচুর গাছ ভেঙে পড়ে।
কিন্তু আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দুর্যোগ এখনও কাটেনি!! বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রভাব থাকবে ঘূর্ণিঝড়ের।
১১ বছর আগে আয়লার দাপটে ছারখার হয়ে গেছিল হিঙ্গলগঞ্জ। বিদ্যাধরী, রায়মঙ্গল, ছোট কলাগাছি-সহ বেশ কয়েকটি নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে ভেসে গিয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। নোনা জল ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ধানের জমি, ফসল। সেই ধাক্কা আজও পুরোপুরি সামলে উঠতে পারেননি হিঙ্গলগঞ্জের বাসিন্দারা। তার মধ্যেই ফের একবার হিঙ্গলগঞ্জে গভীর ক্ষতচিহ্ন এঁকে দিল ঘূর্ণিঝড় উমপুন। ঝড় থামলেও, এই তাণ্ডবের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে এখানকার গরিব মানুষগুলোর কত সময় লাগবে, তা কেউ জানে না।
সমুদ্রের এই রূদ্র-মূর্তি বহুদিন দেখেননি কেউ। ঘূর্ণিঝড় উমপুনের প্রভাবে বুধবার দিঘা-মন্দারমণিতে দেখা গেল এমনই ছবি। দেওয়াল টপকে বিশাল বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ল রাস্তায়। দিনের শেষে উমপুনের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হল দিঘা, মন্দারমণি! ভেঙে পড়ল শয়ে শয়ে গাছ। ধূলিসাৎ হল বাড়ি। উপড়ে গেল বিদ্যুতের খুঁটি। উড়ে গেল ভর্তি জলের ট্যাঙ্কও! জলোচ্ছ্বাসের জেরে সমুদ্রের লোনা জল ঢুকে যায় একের পর এক গ্রামে। উমপুনের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড শঙ্করপুরও।