কলকাতা: বাঁকুড়ায় শুটআউটের ঘটনায় এখনও অধরা হামলাকারীরা। মঙ্গলবার শুটআউটের পর, বুধবার ঘটনাস্থল থেকে পিস্তল উদ্ধার করল পুলিশ। শ্যুটআউটের সময় গাড়িতে থাকলেও, তারপর থেকেই খোঁজ মিলছে না সাদ্দামের। হামলার নেপথ্যে থাকতে পারে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও, বক্তব্য শুটআউটে আহতের পঞ্চায়েত সদস্যা স্ত্রীর।


মঙ্গলবার দিনেদুপুরে বাঁকুড়ায় শুটআউটের ঘটনার পর, বুধবার ঘটনাস্থল থেকে পিস্তল উদ্ধার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার করার সময় লোডেড অবস্থায় ছিল পিস্তলটি। সকালে পিস্তলটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রাই। স্থানীয় বাসিন্দা অনন্ত শিট বলেন, “ওই যেখানে গাড়িটা দাঁড়িয়েছিল ওখান থেকেই পিস্তলটা পেয়েছে। কেউ বলছে ৬ রাউন্ড কেউ বলছে ৭ রাউন্ড গুলি চালানো হয়েছে।’’

যেখানে শুটআউটের ঘটনা ঘটে তার পাশেই একটি লোহার গেটে গুলির দাগ এখনও স্পষ্ট। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার কেশিয়াকোলে শুটআউটের ঘটনা ঘটে। বাঁকুড়া-দুর্গাপুর রাজ্যসড়ক ধরে গাড়িতে ফিরছিলেন ছ'জন। বাঁকুড়া শহর লাগোয়া কেশিয়াকোল এলাকায়, ওই গাড়ি লক্ষ্য করে, পরপর কয়েক রাউন্ড চালায় মোটরবাইকে আসা দুই দুষ্কৃতী। গুলিতে জখম হন পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন INTTUC-র সাধারণ সম্পাদক নুর মহম্মদ শাহ, এবং গলসি পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যার স্বামী শেখ জিয়াবুল হক। কিন্তু হঠাৎ তাঁর স্বামীকে কেন গুলিবিদ্ধ হতে হল? চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা। গুলিবিদ্ধের স্ত্রী ও তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য, নমিতা শেখ বলেন, “হ্যাঁ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে। তৃণমূল তৃণমূলের মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে। প্রধান নিয়ে সমস্যাটা হয়েছিল। যেটা আমাকে বলেছিল প্রধান করব প্রধান করেনি তা নিয়ে আমাদের গোষ্ঠী একটা চলছিল।’’  তবে কি বাঁকুড়ায় শুটআউটের ঘটনার সঙ্গে পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও সম্পর্ক আছে? যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে চায়নি তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন,“এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও বিষয় নেই।’’

পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়, সাদ্দাম শেখ নামে জামিনে মুক্তি পাওয়া এক যুবককে নিতে, মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান থেকে কয়েকজন বাঁকুড়ায় এসেছিলেন। শুটআউটের সময় গাড়িতে সাদ্দাম উপস্থিত থাকলেও পরে আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। কিন্তু কে এই সাদ্দাম শেখ? পুলিশ সূত্রে খবর, সাদ্দাম শেখ ও তাঁর বাবা জঙ্গল শেখ পুলিশের খাতায় রীতিমতো দাগী আসামী। ২০১৫ সালে জঙ্গল শেখ কাটোয়া পুরসভার কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকেই ছেলে সাদ্দামের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। ২০১৬ সালে ২ টি খুনের মামলায় জেল হয় জঙ্গল শেখের। সেই মামলায় নাম ছিল ছেলে সাদ্দামেরও। ১ বছর পর গ্রেফতার করা হয় তাঁকেও। সপ্তাহখানেক আগে পুরুলিয়ার সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পায় জঙ্গল শেখ। ছেলে সাদ্দাম ছাড়া পায় মঙ্গলবার। খুন, মাদকপাচার সহ একাধিক অভিযোগে সাদ্দামের নামে রয়েছে ২০ টি মামলা। জঙ্গল শেখের বিরুদ্ধে রয়েছে ৩০ টি মামলা। এদিন কাটোয়ায় সাদ্দাম শেখের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে বাড়ি। বাঁকুড়ায় শুটআউটের কিনারা করতে একাধিক জায়গায় শুরু হয়েছে নাকা চেকিং।


আরও পড়ুন: East Burdwan: টোটোতে সজোরে ধাক্কা গাড়ির, মৃত্যু দুই যুবকের