উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’-য় উত্তর সম্পাদকীয় লেখার জন্য প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তাকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করল সিপিএম। কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিপিএম সূত্রে খবর, দু’একদিনের মধ্যেই অজন্তার কাছে সাসপেনশনের চিঠি পৌঁছে যাবে। এই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
কড়া পথে হাঁটল সিপিএম। তৃণমূলের মুখপত্রে উত্তর সম্পাদকীয় লেখার জন্য অজন্তা বিশ্বাসকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করল দল। গত ২৮ থেকে ৩১ জুলাই ‘জাগো বাংলা’-য় ধারাবাহিক উত্তর সম্পাদকীয় লেখেন সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের মেয়ে অজন্তা বিশ্বাস! ‘বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি’ শীর্ষক প্রবন্ধ লিখেছিলেন তিনি। পার্টি সদস্য, দলের অধ্যাপক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত অজন্তার লেখা প্রকাশিত হতেই শোরগোল পড়ে যায় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের অন্দরে। অজন্তাকে শো-কজ করা হয়।
শো-কজের উত্তরে অজন্তা জানান, ‘সংগ্রামী আন্দোলনে ভারতীয় নারীর ভূমিকা আমার গবেষণার বিষয়। জাগো বাংলার পক্ষ থেকে আমার কাছে লেখা চাওয়া হয়েছিল। লেখা পাঠিয়েছি। অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই। পার্টির খারাপ লেগে থাকলে দুঃখিত।’
সিপিএম সূত্রে খবর, অজন্তার এই জবাবে সন্তুষ্ট ছিল না দল। অজন্তা যে এরিয়া কমিটির সঙ্গে যুক্ত, সেই অধ্যাপক সেল তাঁকে ৬ মাস সাসপেন্ড করার সুপারিশ পাঠায় কলকাতা জেলা কমিটির কাছে। সূত্রের খবর, সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলী ৬ মাসের পরিবর্তে ৩ মাস তাঁকে সাসপেন্ড করার পক্ষে মত দেয়। শনিবার সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটির বৈঠকে শাস্তির মেয়াদ নিয়ে বিতর্ক হয়। অধিকাংশ সদস্যেরই মত ছিল, এরিয়া কমিটির সুপারিশই কার্যকর করা হোক। সেই মতো অজন্তাকে ৬ মাস সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত হয়।
সিপিএমের এই সিদ্ধান্তকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসক দলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘সিপিএম শূন্য থেকে যদি মহাশূন্যে যেতে চায় তাহলে এমন সিদ্ধান্ত নেবে। কূপমণ্ডুক, সঙ্কীর্ণ দল। সিপিএমে স্বাধীনতা নেই। সোমনাথের সঙ্গেও একই কাজ করতে গিয়েছিল।’
দলবিরোধী কাজ করলে কী ধরনের শাস্তি হবে, সিপিএমের গঠনতন্ত্রে তা স্পষ্ট বলা আছে। কিন্তু এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গের কোনও পার্টি সদস্য বিরোধী পত্রিকায় লেখার জন্য দল থেকে সাসপেন্ড হলেন।