কলকাতা: 'আমার অভিযোগ যে সত্যি হল, এটা জেনে খুশি হলাম'। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে তাপস মণ্ডলের গ্রেফতারে প্রতিক্রিয়া দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের। 


কুন্তলের অভিযোগ: ১৪ দিনের জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ।  যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষকে বিচারভবনের ইডি স্পেশাল কোর্ট পেশ করা হয়। সূত্রের খবর, মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগসূত্র নিয়ে নতুন তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে পারে ইডি। পাশাপাশি কুন্তল ঘোষের জামিনের আবেদনের বিরোধিতাও করবে তারা। মঙ্গলবারই ইডি সূত্রে দাবি করা হয়, জেরায় ধৃত যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষ জানায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি, নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা পৌঁছেছিল মানিক ভট্টাচার্যের কাছেও। ৩ জন হ্যান্ডেলারের মাধ্যমে সেই টাকা পাঠানো হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতির কাছে। 


কুন্তলের বয়ানে নয়া সূত্র: ইডি সূত্রে খবর, কুন্তল ঘোষকে জেরা করে ও বিভিন্ন সূত্র মারফত ২৫ জন এজেন্টের নাম পাওয়া গিয়েছে, যারা কুন্তল ঘোষকে টাকা দিয়েছিলেন চাকরির জন্য। ইডি সূত্রে খবর, এরকম ৮ জন এজেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ইতিমধ্য়েই। কত জনের জন্য টাকা দেওয়া হয়? ইন্টারভিউয়ে পাস করিয়ে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন করিয়ে দেওয়া হয়েছিল কতজনের, এজেন্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তার তালিকা তৈরি করতে চাইছে ইডি। ইতিমধ্য়েই, ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, আপার প্রাইমারির চাকরি পাইয়ে দিতে ৮ লক্ষ টাকা করে নিতেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষ। প্রাইমারির জন্য নিতেন ৭ লক্ষ। এমনকি, কলকাতা হাইকোর্ট যখন প্যানেল বাতিল করে তখনও সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ১-২ লক্ষ করে টাকা নিতেন কুন্তল ঘোষ। 


 সিবিআইয়ের নজরে ‘ত্রিভুজ’: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার সিবিআইয়ের নজরে তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষের ‘ত্রিভুজ’। সিবিআই সূত্রে দাবি, চাকরি-বিক্রির নামে কোটি কোটি টাকা লেনদেনে জড়িত তাপস, কুন্তল ও নীলাদ্রি। তিনজনই একে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন। তাই কুন্তলকে আজ নিজেদের হেফাজতে চাইবে সিবিআই। সূত্রের খবর, তাপস, কুন্তল ও নীলাদ্রিকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।  


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গতকালই মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এজেন্ট অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে নীলাদ্রী ঘোষকেও। সিবিআই সূত্রের দাবি, তদন্তে সহযোগিতা করলেও, নিজের বিষয়ে তথ্য গোপন করছিলেন তাপস মণ্ডল। কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি ঘোষ- এই তিন জনের মধ্যে গোপন আঁতাঁত রয়েছে বলেও কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রের দাবি।