আবির দত্ত, রুমা পাল, হিন্দোল দে, কলকাতা: বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আজ দ্বিতীয় দিনে পড়ল, ২৮টি সংগঠনের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলন (Pending DA Agitation Continues For Second Day)। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্না চলবে। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। কোনও সরকারি কর্মীরা আন্দোলন করছেন না, সবাই সিপিএমের কর্মী (CPM Worker)। ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim Controversial Comment) মন্তব্য ঘিরে দানা বেধেছে বিতর্ক।


কী পরিস্থিতি?
বকেয়া DA-র দাবিতে, আন্দোলনের আঁচ ক্রমশ বাড়ছে। নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে কলকাতার রাস্তায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এবার বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আন্দোলনের ঢেউও এসে পড়েছে রাজপথে। শুক্রবার থেকে শহিদ মিনারের নীচে ধর্নায় সামিল হয়েছেন। সরকারি কর্মী এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ২৮টি সংগঠনের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। দাবি পূরণ না হওয়া অবধি এই অবস্থান চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। এর আগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে। এবার বকেয়া ডিএ-র দাবিতে রাতভর অবস্থান বিক্ষোভ দেখা গেল। আন্দোলনকারীদের এক জন বললেন, 'বলেই দিয়েছি। যত ক্ষণ না দাবি আদায় হবে, আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্না চালিয়ে যাবে। 


কী দাবি?
পঞ্চম বেতন কমিশন অনুযায়ী, কেন্দ্র ও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের DA-র ফারাক ছিল ৩৪ শতাংশ। ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী সেই ব্যবধান বেড়ে হয়েছেন ৩৫ শতাংশ। অন্যান্য রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য ডিএ-র হারও এত কম নয়। ২০২১ সালের ১ জানুয়ারির হিসাব অনুযায়ী, এরাজ্যে সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য ডিএ-র হার মাত্র তিন শতাংশ। ২০২০ সালের ১ জুলাইয়ের হিসাব অনুযায়ী, কেরলে সরকারি কর্মচারীরা ৩৬ শতাংশ হারে ডিএ পেয়ে থাকেন। ২০২২ সালের ১ জুলাইয়ের হিসাব অনুযায়ী, তামিলনাড়ুর সরকারি কর্মচারীরা ৩৪ শতাংশ হারে ডিএ পান। ২০২২ সালের ১ অগস্টের হিসাব অনুযায়ী, মধ্যপ্রদেশের সরকারি কর্মচারীরা ৩৪ শতাংশ হারে ডিএ পান। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের হিসাব অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশের সরকারি কর্মচারীরা ৩১ শতাংশ হারে ডিএ পান। ২০২২ সালের অগস্ট মাসের হিসাব অনুযায়ী, ছত্তীসগঢ়ের সরকারি কর্মচারীরা ২৮ শতাংশ হারে ডিএ পান। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের হিসাব অনুযায়ী, ঝাড়খণ্ডের সরকারি কর্মচারীরা ২৮ শতাংশ হারে ডিএ পান। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের হিসাব অনুযায়ী, কর্নাটকের সরকারি কর্মচারীরা ২৭.২৫ শতাংশ হারে ডিএ পান। ২০২১ সালের জুলাই মাসের হিসাব অনুযায়ী, হরিয়ানায় সরকারি কর্মচারীরা ২৮ শতাংশ হারে ডিএ পান। বকেয়া DA-র দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন সরকারি কর্মীরা। বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে চলছে মামলা। এরই মধ্যে শুক্রবার থেকে পথে নেমেছেন আন্দোলনকারীরা। ত্রিপলের নীচে রাত কাটিয়েছেন!! শনিবার সকাল থেকে ফের শুরু হয় স্লোগান-বিক্ষোভ। কিন্তু, এই আন্দোলকারীদের সিপিএমের কর্মী বলে কটাক্ষ করেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়, 'কোনও সরকারি কর্মী আন্দোলনে বসেননি। এঁরা সকলে সিপিএম কর্মী। সরকার সময় মতোই কাজ করবে।' বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। আপাতত ১৫ মার্চ, সুপ্রিম কোর্টে DA-মামলা শুনানি হওয়ার কথা। সে দিকেও নজর রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের।


আরও পড়ুন:বিজেপির জেলা সভাপতিকে জুতোপেটা মহিলা কর্মীর, মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার বৈঠকে ধুন্ধুমার