শিলিগুড়ি ও কলকাতা: উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার শিলিগুড়ি থেকে ফুলবাড়ি!অভিযানে এক দলীয় কর্মীর মৃত্যুও হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির।প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বনধের ডাক দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
অক্টোবরে বিজেপির নবান্ন অভিযান রুখতে, রঙিন জল ছোড়া নিয়ে বিতর্কের জল গড়িয়েছিল অনেক দূর!আর সোমবার শিলিগুড়িতে বিজেপির যুব মোর্চার উত্তরকন্যা অভিযান আটকাতেও অভিনব পদ্ধতি অবলম্বন করল পুলিশ।
শিলিগুড়ির তিনবাতি মোড়ে ত্রিস্তরের ব্যরিকেড তৈরি করেছিল পুলিশ। আন্দোলনকারীদের আটকাতে একেবারে শেষ ব্যরিকেড তৈরি করা হয়েছিল অভিনব পদ্ধতিতে।
দুটি জলকামানের সামনে প্রথমে লোহার ব্যরিকেড।তারপরই ছিল প্লাইউড!সেই প্লাইউডে মাখানো ছিল পিচ্ছিল রাসায়নিক।যাতে বিক্ষোভকারীরা ব্যরাকিডে উঠে টপকাতে না পারেন। তবে কার্যত বিফলেই যায় পুলিশের এই প্রচেষ্টা!
বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখানোর সময়, ব্যারিকেডের সেই প্লাইউড ফেলে দেন।
তবে বিজেপির অভিযান ঘিরে এদিন শিলিগুড়ি ও ফুলবাড়িকে কার্যত দূর্গে পরিণত করেছিল পুলিশ।
ঠিক একইভাবে ফুলবাড়িতেও জলকামান ও বিশাল পুলিশ মোতায়েন ছিল।
সেখানেই তাদের কর্মী উলেন রায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি বিজেপির।

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, পুলিশ পাখি মারার ছড়রা গুলি চালিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতীরা মিশে ছিল। নন্দীগ্রামের কায়দায় গুলি চালানো হয়েছে। পুলিশ ওপর থেকে বোমা ছুঁড়েছে।
দলীয় কর্মীর মৃত্যুর প্রতিবাদে কাল উত্তরবঙ্গে ১২ ঘন্টার বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য এ কথা জানিয়েছেন।

পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধেই হিংসাত্মক আন্দোলনের অভিযোগ তুলেছে রাজ্য পুলিশ। ট্যুইটারে তাদের তরফে দাবি করা হয়েছে, শিলিগুড়িতে একটি রাজনৈতিক দলের সমর্থকরা (বিজেপি) প্রতিবাদ কর্মসূচির সময় হিংসাত্মক ভূমিকা পালন করেছেন। আগুন জ্বালানোর পাশাপাশি, গুলি চালানো ও সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করা হয়েছে।

আন্দোলনকারীদের আটকাতে পুলিশকেও এদিন বেশ কড়া ভূমিকাতেই দেখা গিয়েছে।

পুলিশের এই অতিসক্রিয়তার নিন্দা করেছে কংগ্রেস।প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন,দমন পিড়নের রাজনীতিতে কংগ্রেস বিশ্বাসী নয়। রাজনৈতিক আন্দলনের অধিকার সবার আছে, যদিও পুলিশ লাঠি চালিয়ে রাখে, সেটা ঠিক হয়নি।

এদিনের অশান্তির জন্য আবার তৃণমূল-বিজেপিকে একযোগে আক্রমণ করেছে সিপিএম। দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য, বিজেপি ও তৃণমূল-উভয় দলই হিংসায় বিশ্বাস করে। দুই দলেরই লক্ষ্য মেরুকরণ। দুই দলই একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। আর রাজনৈতিক হিংসার কথা বলতে গেলে, এ ধরনের ঘটনা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা। এমনটা আদৌ হওয়া উচিত নয়। রাজনৈতিক বিরোধিতা থাকবে, কিন্তু হিংসা কোনওভাবেই কাম্য নয়।

যদিও, যাবতীয় অশান্তির দায় বিজেপির ওপরই চাপিয়েছে তৃণমূল।

পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেছেন, ফুলবাড়ির সামনে যেটা হয়েছে তা নিন্দনীয়, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ভাষা এটা হতে পারে না, সশস্ত্রভাবে আগুন ধরিয়েছে, বেআইনি সমাবেশ করে যে ঘটনা ঘটেছে, গুণ্ডামি করেছে, , তার নিন্দা করি। অনেক পুলিশ আহত হয়েছে।
সব মিলিয়ে বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার।