দীপক ঘোষ, কলকাতা: বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের যে কারণগুলি চিহ্নিত হয়েছে, তার বেশিরভাগের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর বার্তায় বলে রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর। আদৌ রিপোর্ট দেওয়া হবে কি না? দিলে কবে দেওয়া হবে? এ নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা।
টার্গেট ছিল ২০০-র বেশি আসন। কিন্তু আদতে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ঝুলিতে এসেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বেঁধে দেওয়া টার্গেটের প্রায় তিন-ভাগের এক ভাগ। কিন্তু কেন এরকম ফল হল? সূত্রের খবর, ফল বেরনোর পর প্রায় সাড়ে তিন মাস হলেও, ভোটে হারের পর্যালোচনা রিপোর্ট এখনও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে জমাই দেয়নি রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্ব পরাজয়ের যে কারণগুলিকে চিহ্নিত করেছে, তার বেশিরভাগের দায়িত্ব বর্তায় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর।
বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেই মনে করেন, ভোটের কয়েকমাস আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক প্রধান সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়ায় ভোটের সময় সংগঠন প্রত্যাশিতভাবে কাজ করতে পারেনি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেতে অন্য দল থেকে অবাধে নেতানেত্রীদের নেওয়াটাও দলের জন্য বুমেরাং হয়েছে। স্থানীয় স্তরে যে সব নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছিল, তাঁরা বিজেপিতে চলে আসায় দলের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বেশ কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও বিজেপির পর্যালোচনায় উঠে এসেছে। অন্য দল বা অন্য জায়গা থেকে আসা নেতাদের প্রার্থী করায় স্থানীয় স্তরে কাঙ্খিত সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।
এর পাশাপাশি, আরও একটি কারণ নিয়েও বিজেপির অভ্যন্তরে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যা নিয়ে মুখ খুলে ইতিমধ্যেই দলের ভিতরে কোণঠাসা হয়েছেন বিজেপি নেতা সব্যসাচী দত্ত।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে রিপোর্ট দেওয়া নিয়ে স্পষ্ট কোনও উত্তর দিচ্ছেন না রাজ্য বিজেপির নেতারা। রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘পর্যালোচনা হচ্ছে, চলছে। কী কারণ আপনাদের বলব না। রিপোর্ট দেব কি দেব না, মিডিয়াকে বলব না।’
রাজ্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু জানিয়েছেন, ‘পর্যালোচনা চলছে, আরও চলবে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সামনেও পর্যালোচনা হয়েছে। এখন লিখিত রিপোর্ট দেওয়া হবে কি না, তা বলা শক্ত।’
সবমিলিয়ে হারের কাটাছেঁড়ায় গেরুয়া শিবিরেই এখন নাজেহাল অবস্থা।